শুক্রবারের (জুলাই ১২, ২০২৪ ) আবহাওয়া পূর্বাভাস
আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টা বেজে ২০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেশের ৭ টি বিভাগের (রাজশাহী বিভাগ ছাড়া) বিভিন্ন জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ সকাল থেকেই দেশের বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে যা আগামীকাল সকাল ১০ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান মেঘের চিত্র (বিকেল ৫ টা বেজে ২০ মিনিট)
রংপুর বিভাগ: আজ বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে রংপুর বিভাগের সকল জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার উপরে বজ্রপাত সহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে ও এই বৃষ্টিপাত দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে ও অন্য সকল জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে রাত ১২ টার মধ্যে।
চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ শুক্রবার ভোর থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা জেলার উপরে বজ্রপাত সহ উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (বিকেল ৫ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার আশংকা করা যাচ্ছে।
সিলেট বিভাগ: আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে টার সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। সন্ধ্যা ৭ টার পর রাত ১২ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার পর থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৫৫ মিলিমিটার ও সিলেট জেলায় ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টার সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির হওয়ায় সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আগামীকাল শনিবারও সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
বরিশাল বিভাগ: আজ সকাল থেকেই বরিশাল বিভাগের সকল জেলার উপরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। চলমান এই বৃষ্টিপাত আজ রাত ১২ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আগামীকাল শনিবারও বরিশাল বিভাগের সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ: গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতের পর থেকেই ময়মনিসংহ বিভাগের সকল জেলার উপরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। জামালপুর ও শেরপুর জেলার উপর বৃষ্টি কমে আসলেও নেত্রকোনা ও ময়মনিসংহ জেলার উপরে চলমান এই বৃষ্টিপাত আজ রাত ৮ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আগামীকাল শনিবারও ময়মনসিংহ বিভাগের সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
খুলনা বিভাগ: গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতের পর থেকেই খুলনা বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে সকালে দক্ষিণের জেলাগুলোর উপরে বিস্তার লাভ করেছে। খুলনা বিভাগের দক্ষিণের জেলাগুলোর উপরে চলমান এই বৃষ্টি আজ রাত ৯ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার আশংকা করা যাচ্ছে। আগামীকাল শনিবারও খুলনা বিভাগের সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
ছবি: বিকেল ৫ টা বেজে ৩০ মিনিটে সময় প্রাপ্ত বজ্রপাত মানচিত্র।
ঢাকা বিভাগ: গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতের পর থেকেই ঢাকা বিভাগের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত শুর হয়েছে সকালের পর থেকে ঢাকা শহর সহ দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের জেলাগুলোর উপরে বিস্তার লাভ করেছে। আগামীকাল শনিবারও
বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকার আশংকা করা যাচ্ছে ঢাকা বিভাগের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব পাশের জেলাগুলো উপরে বিশেষ করে পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে। ঢাকা বিভাগের সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
আজ ঢাকা শহরের উপরে বৃষ্টিপাত হতে পারে বিকেল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
রাজশাহী: বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে রাজশাহী বিভাগের সকল জেলার উপরে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
==============================================
এই পূর্বাভাস লেখার সময় (বিকেল ৫ টা বেজে ২০ মিনিট) পশ্চিমবঙ্গের বেশিভাগ জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরের জেলা দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা রাত ১০ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের সকল জেলার উপরে হালকা বজ্রপাতসহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।
আজ কোলকাতা শহরের উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে বিকেল ৫ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস:
============================================
বিকেল ৬ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের বেশিভাগ জেলার উপরে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
===============================================================
রাত ৮ টার পর থেকে ভোর ৫ টার মধ্যে আজ আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা পরিস্থিতির আপডেট (১২ ই জুলাই, ২০২৪)
===========================================
গত সোমবার থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম পাশে মাঝারি থাকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে যা আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে চলমান বৃষ্টিপাত আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা দেখা যাচ্ছে রংপুর বিভাগের সকল জেলা, পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের জেলাগুলো, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে।
ছবি কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
গত ৩ দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি-প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র নদীর এবং এই নদীগুলোর উপ ও শাখা নদীগুলোতে বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে (১২ ই জুলাই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে)।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার পর থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৫৫ মিলিমিটার ও সিলেট জেলায় ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার মধ্যে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ খাসি পর্বত এলাকার উপরে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মেঘালয়ের খাসি পর্বত এলাকার অন্যান্য স্থানেও ভারি বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয় রাজ্যের খাসি পর্বত এলাকার উপরে হওয়া এই ভারি বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রবল আশংকা রয়েছে আজ থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদীগুলোর পানি সমতলের উচ্চতা দ্রুত বৃদ্ধির।
ছবি কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার অব্যাহত থাকার আশংকা
=======================================================================
ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে এই সপ্তাহেই বন্যার পানি পৌঁছে যাওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। পদ্ম-নদীর উপকূলবর্তী ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, মুন্সিগন্জ, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, জেলাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।