বুধবারের (জুলাই ১০, ২০২৪ ) আবহাওয়া পূর্বাভাস

আজ বুধবার সকাল ৮ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেশের ৩ টি বিভাগের (রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম) বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। আজ সকাল ৯ টার পর থেকে আগামী কাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্য ৫ টি বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপরে বিচ্ছিন্ন ভাবে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। 

ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান মেঘের চিত্র (সকাল ৮ টা বেজে ৩০ মিনিট)

রংপুর বিভাগ: গতকাল মধ্য রাতের পর থেকে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (সকাল ৯ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ সকাল ৯ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সকল জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল সকাল ১০ টার মধ্যে আবারও পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ বুধবার ভোর থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী জেলার উপরে বজ্রপাত সহ উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (সকাল ৯ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ সকাল ৯ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সকল জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবন, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ও কুমিল্লা জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

সিলেট বিভাগ: আজ বুধবার সকাল ৯ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। সকাল ১১ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার সিলেট বিভাগের উপরে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। 

বরিশাল বিভাগ: সকাল ১১ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের একাধিক জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে বরগুনা, ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার উপকূলীয় এলাকার উপজেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ: সকাল ১১ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। দুপুর ২ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

খুলনা বিভাগ: সকাল ১০ টার পর থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। দুপুর ১২ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে খুলনা বিভাগের উত্তর দিকের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে মাগুরা, যশোর, ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

ছবি: সকাল ৮ টার সময়কার প্রাপ্ত বজ্রপাত মানচিত্র।

ঢাকা বিভাগ: সকাল ১১ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে ঢাকা বিভাগের পশ্চিম পাশের জেলাগুলো বিশেষ করে পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

আজ ঢাকা শহরের কোন-কোন এলাকার উপরে বৃষ্টিপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে।

রাজশাহী: সকাল ১১ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
==============================================

এই পূর্বাভাস লেখার সময় (সকাল ৮ টা বেজে ৪০ মিনিট) পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছিল যা দুপুর ৩ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টির সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। সকাল ১০ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে দক্ষিণের বেশিভাগ জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলী, কোলকাতা, মেদিনীপুর, বান্কুরা, পুরুলিয়া জেলার উপরে।

আজ কোলকাতা শহরের উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস:
============================================

এই পূর্বাভাস লেখার সময় (সকাল ৯ টা) ত্রিপুরা রাজ্যের বেশিভাগ জেলার আকাশে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের মেঘে ঢাকা অবস্থায় রয়েছে। সকাল ৯ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সকল জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
===============================================================
দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে পূর্ব আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। 

বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা পরিস্থিতির আপডেট (১০ ই জুলাই, ২০২৪)
===========================================

গতকাল সোমবার থেকে আবারও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম পাশে মাঝারি থাকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে আগামী ৩ দিন (শুক্রবার পর্যন্ত) মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা দেখা যাচ্ছে রংপুর বিভাগের সকল জেলা, পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের জেলাগুলো, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে।

ফলে প্রতিদিনই রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতির আশংকা করা যাচ্ছে। আজ বুধবার থেকে আবারও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির আশংকা করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি-প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র নদীর এবং এই নদীগুলোর উপ ও শাখা নদীগুলোতে বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে (৯ ই জুলাই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে)। 

ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে এই সপ্তাহেই বন্যার পানি পৌঁছে যাওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। পদ্ম-নদীর উপকূলবর্তী ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, মুন্সিগন্জ, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, জেলাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে।