বৃহঃপতিবারের (জানুয়ারি ৪) আবহাওয়া পূর্বাভাস: কুয়াশার পরিমাণ দেশের উত্তর-পশ্চিমে কমেছে এবং দক্ষিণ-পূর্বে বাড়িতেছে; ঠাণ্ডার পরিমাণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা
আজ বৃহঃপতিবারও (জানুয়ারি ৪, ২০২৪) বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি ছিল। গতকাল বুধবার অপেক্ষা আজ বৃহঃপতিবার কুয়াশা যুক্ত জেলার সংখ্যা কমে এসেছে ও আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকালে কুয়াশা যুক্ত জেলার সংখ্যা কমে আসার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশার পরিমাণ দেশের উত্তর-পশ্চিম দিকের বিভাগগুলোতে (রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা) কমা শুরু করেছে। পক্ষান্তরে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের বিভাগুলোর উপর কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে গত রবিবার থেকে। চলমান কুয়াশা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করার পূর্বেই পূর্বাভাস করা হয়েছিল যে কুয়াশা দেশের উত্তর-পশ্চিম দিকের বিভাগগুলোর উপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের বিভাগগুলোর উপর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও মায়ানমারে প্রবেশ করার কথা।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ৬ টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৪) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে ।
আজ বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে ময়মনিসংহ, বরিশাল, ও সিলেট বিভাগের বেশিভাগ জেলাগুলোর উপরে। ঢাকা বিভাগের দক্ষিণের জেলাগুলো ও চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরেও ভারি কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে। আজ সকালে অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণের জেলাগুলোর উপরে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ৯ টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৪) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে ।
সকাল ৯ টার কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজ প্রায় সারদিনই সূর্যের আলোর উপস্থিতি থাকবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা ও খুলনা বিভাগের বেশিভাগ জেলাগুলোর উপরে।
প্রায় সারাদিন ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে সূর্যের আলো দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
ঢাকা বিভাগের পশ্চিম দিকের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১০ টার মধ্যে ও ঢাকা শহর সহ পূর্ব দিকের জেলাগুলো কুয়াশা মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ১২ টার মধ্যে। তবে কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার উপর দুপুর ২ টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর ও মধ্যভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ২ টার পরে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১১ টার মধ্যে।
ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ১ টার পরে; জালপুর ও শেরপুর জেলা কুয়াশা মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১১ টার মধ্যে।
বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো কুয়াশা মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১১ টার মধ্যে।
খুলনা বিভাগের অবশিষ্ট জেলাগুলো কুয়াশা মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১১ টার মধ্যে।
আজ বৃহঃপতিবার সূর্যের আলো দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাক্ষমণবাড়িয়া, কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো, ও ফেনী জেলার উপরে।
বৃহঃপতিবার, জানুয়ারি ৪, ২০২৪ দেশের উল্লেখযোগ্য শহর ও স্থানগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড (সকাল ৬ টার সময়)
আজ বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টার সময় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশালে ভোর ৬ টার সময় ১৫ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহঃপতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে শুক্রবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত দেশের ৮ টি বিভাগের মধ্যে ৫ টি বিভাগের (ময়মনিসংহ, ঢাকা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম) জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশা, ২ টি বিভাগের (রাজশাহী ও খুলনা) জেলাগুলোর উপরে হালকা ঘনত্বের কুয়াশা ও ১ টি বিভাগের (রংপুর) জেলাগুলোর উপরে মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি থাকার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আজ রাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে কুয়াশার চাঁদেরে ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো। পক্ষান্তরে সর্বনিম্ন পরিমাণে কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে রংপুর ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে।
আজ বৃহঃপতিবার দিবাগত রাতে (পুরো রাত) আবারও ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল সড়ক ও মহাসড়ক।
আজ বৃহঃপতিবার দিবাগত রাতে (রাত ১০ টার পর থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত) খুবই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল নৌপথ। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথগুলোর দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬ টার সময়কার কুয়াশার সম্ভাব্যতার মানচিত্র, আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম “ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স” (যে স্থানে রং যত বেশি লাল সেই স্থানে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স এর মান ৩১ এর কম হলে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা; ৩১ থেকে ৫৫ এর মধ্য থাকলে হালকা থেকে মাঝারি মানের কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা ও ৫৫ এর বেশি হলে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম নির্দেশ করে।
আগামী ৩ দিনের (রবিবার পর্যন্ত) কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ পূর্বাভাস
আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখের পূর্বাভাস অনুসারে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৭ ই জানুয়ারি এর পরে ও শৈত্যপ্রবাহ ৯ ই জানুয়ারি এর পরে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে বৃহঃপতিবার (জানুয়ারি ৪) ও শুক্রবার (জানুয়ারি ৫) কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টার সময় পশ্চিমবঙ্গের বেশিভাগ জেলা ছিলও কুয়াশা মুক্ত। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে শুধুমাত্র উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার উপস্থিতি। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলোর উপরে শীতকালের স্বাভাবিক কুয়াশার উপস্থিতি ছিলও।
আজ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্যাঞ্চলের বেশিভাগ জেলার উপরে আবারও মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
বিহার রাজ্যের দিক থেকে নতুন করে কুয়াশা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যা আজ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বীরভূম, মালদহ, এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উপরে প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনা খুবই বেশি যে আগামীকাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে সর্ব উত্তরের ও সর্ব দক্ষিণের জেলাগুলোর কুয়াশার পরিমাণ সর্বনিম্ন থাকার কিংবা কুয়াশা মুক্ত থাকার।
সর্ব-ভারতীয় কুয়াশা অবস্থা (জানুয়ারি ৪, ২০২৪)
আজ বৃহঃপতিবার ও ভারতের উত্তর পশ্চিমের বেশিভাগ রাজ্য মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। গত ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের সকল রাজ্য ভারি কুয়াশার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছিল তা আজ জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখ অনেকাংশে কমে এসেছে বেশিভাগ রাজ্যের উপরে। কুয়াশার ঘনত্ব কমে আসার কারণে বিভিন্ন রাজ্যে বিমান চলাচল ব্যবস্হার উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও রাত্রিকালীন ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বিমান উঠা-নামার জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিসীমার অভাবে।
তবে আজ বৃহঃপতিবার ভারত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সকাল ৬ টা থেকে সকাল ৯ টার মধ্যে প্রাপ্ত বিভিন্ন চিত্রে (Visible, Dust RGB and Day Microphysics) দেখা গেছে যে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের ভারতীয় রাজ্যগুলোর উপরে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমে এসেছে গতকাল মঙ্গলবার অপেক্ষা।
ভারত, জাপান ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সেন্সর দ্বারা সংগৃহীত কুয়াশার চিত্র ৪ রা জানুয়ারি, ২০২৪।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।