শুক্রবারের (জানুয়ারি ৫) আবহাওয়া পূর্বাভাস: আগামী সোমবারের মধ্যে দেশব্যাপী চলামনা কুয়াশার প্রকোপ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা
আজ শুক্রবার (জানুয়ারি ৫, ২০২৪) বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি ছিল। গতকাল বৃহঃপতিবার অপেক্ষা আজ শুক্রবার কুয়াশা যুক্ত জেলার সংখ্যা আরও কমে এসেছে ও আগামীকাল শনিবার ভোর ৬ টার সময় কুয়াশা যুক্ত জেলার সংখ্যা আরও কমে আসার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৬ টার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশার পরিমাণ দেশের উত্তর-পশ্চিম দিকের ৩ টি বিভাগের (রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা) জেলাগুলো প্রায় কুয়াশা মুক্ত ছিলও। পক্ষান্তরে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের ৫ টি বিভাগের জেলাগুলোর উপর মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে। আগামীকাল শনিবার ও রবিবার চলমান কুয়াশা আর দক্ষিণ-পূর্ব দিকের জেলাগুলোর উপরে সরে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে আগামী সোমবার সকাল ৬ টার সময় বাংলাদেশের কোন জেলার উপরে কুয়াশা না থাকার। আগামী সোমবার কুয়াশা বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও মায়ানমারে প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ৬ টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে ।
আজ সকাল ৬ টার কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সকল জেলায় ও ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল বিভাগের বেশিভাগ জেলাগুলোর উপরে।
আজ শুক্রবার সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বেশিভাগ জেলাগুলোর উপরে। বিশেষ করে মেঘনা নদীর উপকূলবর্তী সকল জেলার উপরে। তবে ঢাকা বিভাগের দক্ষিণের ও চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরেও ভারি কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ১১ টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৪) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে ।
সকাল ১১ টার কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে দেশের বেশিভাগ জেলার উপর থেকে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলো দেখা গেছে। তবে সকাল ১১ টার সময় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের একাধিক জেলার উপরে কুয়াশার উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে যা দুপুর ২ টা পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। তবে সম্ভাবনা রয়েছে যে আজ কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষমণবাড়িয়া, কুমিল্লা উত্তর, খাগড়াছড়ি, ও রাঙ্গামাটি জেলার উপরে প্রায় সারদিনই সূর্যের আলো না দেখতে পাওয়ার।
শুক্রবার, জানুয়ারি ৫, ২০২৪ দেশের উল্লেখযোগ্য শহর ও স্থানগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড (সকাল ৬ টার সময়)
আজ শুক্রবার সকাল ৬ টার সময় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশালে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে শনিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত দেশের ৮ টি বিভাগের মধ্যে ৪ টি বিভাগে (ময়মনিসংহ, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম) জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশা, ১ টি বিভাগের (বরিশাল) জেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি থাকার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আজ রাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে কুয়াশার চাঁদেরে ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সর্বনিম্ন পরিমাণে কুয়াশা কিংবা কুয়াশা মুক্ত থাকার সম্ভাবনা প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে।
মহাসড়কে বাস-ট্রাক চলাচল ঝুঁকি ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে (পুরো রাত) আবারও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল সড়ক ও মহাসড়ক।
নৌ-পরিবহন ঝুঁকি ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে (রাত ১০ টার পর থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত) খুবই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল নৌপথ। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথগুলোর দৃষ্টিসীমা ৫০০ মিটারের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: আগামীকাল শনিবার সকাল ৬ টার সময়কার কুয়াশার সম্ভাব্যতার মানচিত্র, আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম “ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স” (যে স্থানে রং যত বেশি লাল সেই স্থানে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স এর মান ৩১ এর কম হলে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা; ৩১ থেকে ৫৫ এর মধ্য থাকলে হালকা থেকে মাঝারি মানের কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা ও ৫৫ এর বেশি হলে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম নির্দেশ করে।
আগামী ৩ দিনের (সোমবার পর্যন্ত) কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ পূর্বাভাস
আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখের পূর্বাভাস অনুসারে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৭ ই জানুয়ারি এর পরে ও শৈত্যপ্রবাহ ৯ ই জানুয়ারি এর পরে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে শুক্রবার (জানুয়ারি ৫) ও শনিবার (জানুয়ারি ৬) কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ শুক্রবার সকাল ৬ টার সময় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সকল জেলা ছিলও কুয়াশা মুক্ত। প্রায় সকল জেলার উপরে শীতকালের স্বাভাবিক কুয়াশার উপস্থিতি ছিলও। আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সকল জেলা কুয়াশা মুক্ত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্ব-ভারতীয় কুয়াশা অবস্থা (জানুয়ারি ৫, ২০২৪)
আজ শুক্রবারও ভারতের উত্তর পশ্চিম দিকের বেশিভাগ রাজ্য মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। গত ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের সকল রাজ্য ভারি কুয়াশার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছিল তা উত্তর-পূর্ব দিকের রাজ্যগুলোতে কমে আসা শুরু করলেও জানুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের রাজ্যগুলোর উপর বিস্তার লাভ করা শুরু করেছে।
তবে আজ শুক্রবার ভারত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সকাল ৬ টা থেকে সকাল ১১ টার মধ্যে প্রাপ্ত বিভিন্ন চিত্রে (Visible, Dust RGB and Day Microphysics) দেখা গেছে যে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের ভারতীয় রাজ্যগুলোর উপরে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমে এসেছে গতকাল বৃহঃপতিবার অপেক্ষা তবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের রাজ্যগুলোর উপর কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে গতকাল অপেক্ষা।
ভারত, জাপান ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সেন্সর দ্বারা সংগৃহীত কুয়াশার চিত্র ৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।