ঘূর্ণিঝড় (সম্ভব্য) রেমাল আপডেট ৯ (মঙ্গলবার ২১ শে মে, ২০২৪): ২৬ শে মে সরাসরি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের আশংকা
আজ ২১ শে মে, ২০২৪ তারিখে বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো প্রায় ৮০ থেকে ৯০% নিশ্চিত যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে রেমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া।
বিশ্বের প্রধান-প্রধান দুইটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম মডেল নির্দেশিত উপকূলে আঘাতের স্থান ও সময়ের পার্থক্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টি কি পরিমাণ শক্তিশালি হতে পারে ও উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ কত হতে পারে তা নিয়ে মডেল দুইটির মধ্যে এখনও কিছু পার্থক্য রয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে আমার গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় প্রমাণ পেয়েছি যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রথমে আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা Global Forecast System (GFS) নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল নির্দেশ করলেও ঘূর্ণিঝড়ের স্থল ভাগে আঘাতের স্থান ও সময় বিষয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সঠিক পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বা ECMWF Integrated Forecasting System (IFS)।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল কবে সৃষ্টি হতে পারে ও কোন সময়ে উপকূলে আঘাত করতে পারে?
আগামীকাল বুধবার ২২ শে মে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। লঘুচাপটি পরবর্তী ২৪ ঘন্টা উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। লঘুচাপটি ২৩ শে মে এর মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপ অবস্থায় উত্তর-পূর্ব দিকে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আগামী ২৪ শে মে নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপ অবস্থায় মায়ানমার ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূল এবং মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপটি ২৫ শে মে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল কোন দিন ও কোন সময়ে উপকূলে আঘাত করতে পারে?
আজ ২১ শে মে, ২০২৪ তারিখে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের বৃত্তের ডান পাশের পরিধি ২৫ শে মে দিবাগত মধ্য রাতের পর থেকে কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের বামপাশ ঘেঁষে বরিশাল বিভাগের দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা নির্দেশ করতেছে। ফলে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ % নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায় যে ঘূর্ণিঝড় রেমাল বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্হন ভাগে আঘাত করতে পারে ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ শে মে দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থল ভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২ টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর আঘাতের সম্ভব্য স্থান ও ঐ স্থানে আঘাতের সম্ভবতার পরিমাণ।
ঘূর্ণিঝড়ের উপকূলে আঘাতের সম্ভব্য স্থান
প্রায় ৭০ থেকে ৮০ % নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মধ্যবর্তী কোন উপকূলের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল কোন দিন ও কোন সময়ে উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা বেশি?
আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল মে মাসের ২৬ তারিখ সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে উপকূলে আঘাত করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রভাগ ২৫ শে মে সকাল ৯ টার পর থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলে আঘাত করা শুরু করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে অতিক্রমের সম্ভব্য সময় ২৫ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টা এর মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছনের অর্ধেক অংশ স্থল ভাগ অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ শে মে দুপুর ১২ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ ও সর্বোচ্ছ গতিবেগ কেমন হতে পারে?
ঘূর্ণিঝড় রেমাল সমুদ্রের মধ্যে থাকা অবস্হায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘন্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দমকা হাওয়া সহ যা ঘন্টায় ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া সহ ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের সবচেয়ে শক্তিশালি বাতাস অতিক্রম করতে পারে পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপর দিয়ে। [এই শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করা হয়েছে আজ ২১ শে মে তারিখ পর্যন্ত পূর্বাভাস অনুসারে]।
ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে উপকূলীয় এলাকা কত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে?
সর্বশেষ পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করা আশংকা করা যাচ্ছে যে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সৃষ্ট সবচেয়ে শক্তিশালি বায়ু বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। অধিকন্তু ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু পূর্ণিমা রাতের মাত্র ২ দিন পরে উপকূলে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের উপরে কবে থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে ও কত দিন পর্যন্ত চলতে পারে?
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বাংলাদেশে উপরে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ শে মে থেকে যা ২৮ শে মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের উপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৫, ২৬ ও ২৭ শে মে। অপেক্ষাকৃত হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের ২৪ ও ২৮ তারিখে।
কৃষকদের জন্য পরামর্শ
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে। ফলে বাংলাদেশের কৃষকদের অনুরোধ করবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার জন্য। জমিতে পাকা ধান থাকলে তা কেটে মড়াই করাে জন্য। শাক-সবজির জমিত যেন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জামা হওয়া বৃষ্টির পানি জমে শস্যের ক্ষতি না করে।
সমুদ্র-গামী জেলেরা কোন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে?
সম্ভাবনা খুবই বেশি মে মাসের ২২ তারিখ থেকে সমুদ্র উত্তাল হওয়া। সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেরা যেন অবশ্যই মে মাসের ২৩ তারিখের মধ্যে উপকূলে ফেরত চলে আসে। মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে সমুদ্রে অবস্থান করা কোন ভাবে নিরাপদ হবে না। মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্র খুবই ভয়ংকর অবস্থায় থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র ট্রলার ডুবে প্রানহানী এড়াতে মে মাসের ২০ তারিখের পর থেকে নতুন করে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার লবণ চাষিদের জন্য পরামর্শ কি?
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকার লবনচাষিদের জানানো যাচ্ছে যে মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে তা মে মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাঠে থাকা লবণ মে মাসের ২৩ তারিখের মধ্যে তুলে ফেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ-গামী পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা কি?
মে মাসের ২৪ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত টেকনাফ-টু-সেন্টমার্টীন নৌ-পথে সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই সেন্টমার্টীন দ্বীপের ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের ২৪ তারিখের পূর্বে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
উপকূলীয় এলাকার বাণিজ্যিক মৎসচাষীদের জন্য পরামর্শ:
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রবল প্রভাব পড়ার আশংকা করা যাচ্ছে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকার উপরে। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রোমাল ভরা-পূর্ণিমার ১ বা ২ দিন পরে উপকুলে আঘাত করার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ (ভাটার সময়) থেকে ১০ ফুট (জোয়ারের সময়) বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশংকা করা যাচ্ছে। মৎসচাষীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার পরামর্শ রইলো।
নিচে বিভিন্ন আমেরিকা, ইউরোপিয়না ইউনিয়ন, ও জার্মানির আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর স্থল ভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান ও সময় এর চিত্র যোগ করা হলও।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের ডান পাশের পরিধি ২৫ শে মে দিবাগত মধ্য রাতের পর থেকে কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের বামপাশ ঘেঁষে বরিশাল বিভাগের দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা নির্দেশ করতেছে। (২১ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।
ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৬ শে মে ভোর থেকে সরাসরি বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যবর্তী উপকূলের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে। (২১ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।
ছবি: জার্মানির আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল মে মাসের ২৬ তারিখ দুপুর ১২ টার পর থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সুন্দরবনের উপর দিয়ে উপকূলের স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে। (২১ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।
পূর্বাভাসের সারাংশ বা উল্লেখযোগ্য মূল্যবান তথ্য
আমার গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় প্রমাণ পেয়েছি যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রথমে আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা Global Forecast System (GFS) নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল নির্দেশ করলেও ঘূর্ণিঝড়ের স্থল ভাগে আঘাতের স্থান ও সময় বিষয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সঠিক পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বা ECMWF Integrated Forecasting System (IFS)।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্হন ভাগে আঘাত করতে পারে ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করা শুরু করতে পারে সকাল ৬ টার পর থেকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ শে মে দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থল ভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২ টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
ঘুর্নিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে তবে বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। কিন্তু, ঘুর্নিঝড়টি যদি ভাটার সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে তবে বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।
বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া সহ ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।