সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল আপডেট ১৫ (২৫ শে মে, বিকেল ৬ টা, ২০২৪): রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের ৮ বিভাগের উপরেই। 

 

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল গঠিত হয়েছে (আপডেট: ২৫ শে মে, রাত ১০ টা, ২০২৪)
 
আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার ঘোষণা দিয়েছে যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল গঠিত হয়েছে। জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার এর নির্দেশিত ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা জেলার উপর দিয়ে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত করার সম্ভাবনা। 
 

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর সর্বশেষ অবস্থা (২৫ শে মে বিকেল ৫ টা বেজে ৫০ মিনিট পর্যন্ত)

আজ শনিবার বিকেল ৫ টা বেজে ৫০ মিনিটের সময় জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত মেঘের ঘূর্ণনের চলমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র প্রায় ১৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯ দশমিক ৮ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপর অবস্থান করছিল। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র খেপুপাড়া থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দীপের থেকে প্রায় ৪২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।  

আজ ২৫ শে মে, ২০২৪ তারিখে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডলেগুলো হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কেন্দ্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা (৯০% এর বেশি) দেখা যাচ্ছে। 

উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে ও দমকা হাওয়া সহ ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত (রবিবার মধ্য রাতের পরে) বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। 

ঘূর্ণিঝড় রেমাল তার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করার প্রবল সম্ভাবনা (৯০ % এর বেশি) দেখা যাচ্ছে।   

ঘূর্ণিঝড় রেমাল অস্বাভাবিক ধীরগতিতে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে (২ দিনের বেশি বাংলাদেশের আকাশে থাকার সম্ভাবনা)

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কেন্দ্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা (৯০% এর বেশি) দেখা যাচ্ছে। এর পরে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, আলিপুর দুয়ার, কুচবিহার জেলা ও মেঘালয় রাজ্যের উপর দিয়ে আসাম রাজ্যে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। স্থল ভাগে প্রবেশের পরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কেন্দ্র যখন খুলনা ও ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করবে তখনও বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল খুবই ধীর গতিতে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণ্যমান মেঘমালা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের উপরে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়গুলো অপেক্ষা ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের উপরেই ব্যাপক পরিমাণ বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

রবিবার সরাদিন খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার সারাদিন ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট বিভাগের উপরে এবং মঙ্গলবার সরাদিন রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও সিলেট বিভাগের উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে আজ ২৫ শে মে বাংলাদেশে উপরে যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তা আগামী ২৮ শে মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের উপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মে। সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৭ ও ২৮ শে মে।

ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের কোন বিভাগের উপরে কি পরিমাণে বৃষ্টি শুরু হতে পারে ২৫ থেকে ২৮ এ মে এর মধ্যে?

খুলনা বিভাগ: ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার
বরিশাল বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
ঢাকা বিভাগ: ২০০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার [পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের জেলাগুলোর উপরে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার ও ঢাকার উত্তর ও পূর্ব পাশের জেলাগুলোর উপরর ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার]
চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
রাজশাহী বিভাগ: ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার
ময়মনিসংহ বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
সিলেট বিভাগ: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
রংপুর বিভাগ: ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার  

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে ঘুর্নিঝড় রেমালের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার উপরে সাম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাত (২৮ শে মে রাত ১২ টা পর্যন্ত) 

 

ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী

 ১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্‌কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।

২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না। 

About the Author

Mostofa Kamal Palash

Founder & Lead Meteorologist

Mostofa Kamal Palash is pursuing his Ph.D. in the School of Environment and Sustainability at the University of Saskatchewan, Saskatoon, Canada. Mostofa obtained his MSc from the department of Earth and Environmental Sciences at the University of Waterloo, Waterloo, Ontario, Canada. Mostofa’s MSc Thesis title was “A Comprehensive Sensitivity Analysis of the Weather Research and Forecasting (WRF) Modeling System over Southern Ontario, Canada”. Mostofa completed a Post Graduate Diploma in Earth System Physics from the Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP), Trieste, Italy. His diploma thesis title was "Climate Sensitivity of Land-Use Change over South Asia Using the RegCM3 Modeling System." Mostofa also obtained an MSc in Physics from Shahjalal University of Science and Technology (SUST), Bangladesh. His MSc thesis title was "Seasonal Variation of Sensible and Latent Heat Flux Tendency in Bangladesh." Lastly, Mostofa completed his Bachelor of Science in Physics from (SUST), Bangladesh.

View All Articles