ঈদের দিনের (সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪) বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস  

আজ সোমবার সকাল ৬ টা বেজে ৫০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে ঈদের দিনে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে ঘন মেঘের উপস্থিতি এবং রাজশাহী, ঢাকা, ও খুলনা বিভাগের একাধিক জেলার উপরে হালকা মেঘের উপস্থিতি রয়েছে। আজ দুপুর ১২ টার মধ্যে রংপুর, ময়মনিসংহ ও সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

সিলেট বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। আজ সারাদিন সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে একাধিকবার বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রম করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে আবারও বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। 

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের রাডার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখে গেছে যে গত ২৪ ঘন্টায় মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পর্বত এলাকায় খুবই ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজ সোমবার থেকে আবারও সিলেট বিভাগের নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করার। সেই সাথে নতুন করে বন্যা পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে সিলেট বিভাগের জেলাগুলো।  

রংপুর বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে রংপুর বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। সকাল ৬ টার সময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, নীলফামারী, রংপুর, ও কুড়িগ্রাম জেলার উপরে বজ্রপাত সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে যে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সকাল ৮ টার মধ্যে রংপুর বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত বিস্তার লাভ করার আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাতে আবারও রংপুর বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। 

ময়মনসিংহ বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। সকাল ৭ টার পর থেকে সকাল ১০ টা মধ্যে শেরপুর ও নেত্রকোনা জেলা এবং সকাল ৮ টার পর থেকে ১১ টার মধ্যে জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাতে আবারও ময়মনিসংহ বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে।  

ছবি: সকাল ৬ টা বেজে ৫০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র।

রাজশাহী বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে রাজশাহী বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। আজ সকাল ৮ টার পর থেকে সকাল ১১ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতে আশংকা করা যাচ্ছে। আজ দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট, নওগাঁ, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। 

চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে সকাল ১১ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, বান্দরবন, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং সকাল ১০ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী, উত্তর ও মধ্য চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, ও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে হালকা বজ্রপাত মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা (৭০ থেকে ৮০%) করা যাচ্ছে।

আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে দুপুর ১২ টা মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান জেলার উপরে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

ঢাকা বিভাগ:

আজ সোমবার সকাল ৯ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে ঢাকা বিভাগের উত্তর দিকের বেশিভাগ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। বিশেষ সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে টাঙ্গাইল, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ জেলার উপরে বৃষ্টির কিছু সম্ভাবনা (৭০ থেকে ৮০ %) রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার ভোর এর মধ্যে পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে।

আজ দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে ঢাকা শহরের উপর বৃষ্টিপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।

বরিশাল বিভাগ: আজ সোমবার সকাল ৮ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বরগুনা, পটুয়াখালী, ও ভোলা জেলার উপকূলীয় উপজেলাগুলোর উপরে।

ছবি: সকাল ৭ টার সময়কার বজ্রপাত মানচিত্র।

খুলনা বিভাগ:

আজ সোমবার পুরো দিনের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। দুপুর ১২ টার পূর্বে কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে খুলনা বিভাগের উত্তর দিকের জেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের কিছু সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
=============================================
আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা ৯০ থেকে ১০০ %। আজ সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে বর্ধমান, মালদহ, নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম জেলার উপরে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা ৭০ থেকে ৮০ %। সকাল ১০ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে বান্কুরা, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে (৭০ থেকে ৮০%)। আজ রাতে আবারও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা ৯০ থেকে ১০০ %।

ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
========================================================
আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে পূর্ব আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপর দিয়ে একাধিকবার হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা (প্রায় ৯০ থেকে ১০০%) রয়েছে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
======================================
আজ সোমবার সকাল ৭ টার পর থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সকল জেলার উপর দিয়ে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের প্রবল আশংকা (৭০ থেকে ৮০ %) করা যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত উত্তর দিকের জেলাগুলোর উপরে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিকের জেলাগুলোর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশে একটি মধ্যম মানের বন্যা শুরুর আশংকা করা যাচ্ছে ঈদের পর থেকে।

গত ১ সপ্তাহ থেকে রংপুর বিভাগের জেলাগুলো ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুর-দুয়ার ও কুচবিহার জেলার উপরে নিয়মিত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। গত ৩ দিনে প্রায় প্রতিদিন নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলায় অবস্থিত তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ এর উজানে ভারতের জলপাইগুড়ি, আলিপুর-দুয়ার ও কুচবিহার জেলার উপরে খুব ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ৭ দিন এই সকল জেলার উপরে খুবই ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। একই সময়ে ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরেও খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৬ শে জুন পর্যন্ত ভারতের পশ্চিম-বঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার জেলা এবং আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা রয়েছে। ১৬ ই জুন থেকে শুরু করে আগামী ২৬ শে জুন পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১০০০ থেকে ১৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশংকা নির্দেশ করতেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। এই বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ বাংলাদেশের রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে ঈদের পর থেকেই তিস্তা ও দুধকুমার নদীর উপকূলবর্তী নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর জেলার তিস্তা নদীর উপকূলবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যার শুরু হওয়ার।  

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৬ শে জুন পর্যন্ত।

=============
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
=============

উপরে উল্লেখিত বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস সম্ভাবনা মাত্র। কোন স্থানে বৃষ্টিপাত আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক শর্ত পূরণের উপর নির্ভর করে। বৃষ্টিপাত শুরুর সময় ২ থেকে ৪ ঘন্টা পূর্বে কিংবা পরে হতে পারে