সিলেট ও রংপুর বিভাগের বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশংকা করা যাচ্ছে (১ লা জুলাই, সোমবার, ২০২৪)
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে শনিবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ সোমবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি পর্বত এলাকায় ২ দিন ৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের পুরোটাই সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর উপর দিয়ে সিলেট বিভাগে প্রবেশ করবে। আজ সারাদিনে নতুন করে ৩০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে গতকাল রবিবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ সোমবার সকাল ৯ টার মধ্যে রংপুর ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পশ্চিমা লঘু চাপ, বর্ষাকালের মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ সমুদ্র উপকূল ও মায়ানমারের রাখাই রাজ্যের উপকূলের উপর অবস্থান করতেছে আজ সোমবার) সৃষ্টি হওয়া একটি লঘুচাপের প্রভাবে দেশব্যাপী চলমান বৃষ্টিপাত আগামী ৬ ই জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। আগামী ৬ দিনের প্রতি দিনই ২০ মিলিমিটার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে দেশের বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন জেলাগুলোর উপরে। অর্থাৎ, কোন-কোন দিন কোন-কোন জেলার উপরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।
সিলেট বিভাগে বন্যা পূর্বাভাস:
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত নদ-নদীর পানি প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ সোমবার থেকে আবারও সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি সমতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। সিলেট বিভাগের বেশিভাগ নদীর পানি বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকা পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে যেহেতু গত ২ দিনে মেঘালয় রাজ্যের খাসি পর্বত এলাকায় ৮০০ মিলিমিটার এর বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে সিলেট বিভাগের বেশিভাগ নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে কিংবা বন্যা বিপদসীমার খুবই কাছা-কাছি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
রংপুর বিভাগে বন্যা পূর্বাভাস:
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে শনিবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ সোমবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার ও আলিপুর দুয়ার জেলার উপরে প্রায় ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের পুরোটাই রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার জেলার উপরে দিয়ে যমুনা নদিতে প্রবাহিত হবে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত নদ-নদীর পানি প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ সোমবার থেকে আবারও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার নদ-নদীর পানি সমতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ১০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম রাজ্য। ফলে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর উপকূলবর্তী এলাকাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে কিংবা বন্যা বিপদসীমার খুবই কাছা-কাছি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগামী ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা রয়েছে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলোর পানির উচ্চতা আগামীকাল মঙ্গলবার আরও বৃদ্ধি পাবে ও বন্যা বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।