বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় “ডানা” এর ৪ নম্বর আপডেট (২০ শে অক্টোবর): সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা।
আজ ২০ শে অক্টোবর আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান ও নিকবার দ্বীপপুঞ্জের ২০০ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে একটি লঘু চাপ সৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি বুধবারের মধ্যে (২২ শে অক্টোবর) নিম্নচাপ, ২৩ শে অক্টোবর দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ ও একই দিনে সন্ধ্যার মধ্যে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হওয়ার পরে এর নাম হবে ডানা। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার এর দেওয়া। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস ঘূর্ণিঝড় ডানা সৃষ্টির আশংকা ৯০ থেকে ১০০ %।
ঘুর্নিঝড় ডানা আগামী ২৩ শে অক্টোবর রাত ১২ টার পর থেকে ২৪ শে অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Severe Cyclonic Storm (89–117 km/h) হিসাবে স্থল ভাগে আঘাত করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
ঘুর্নিঝড়টি প্রায় একই পথে অগ্রসর হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে যে পথে ঘুর্নিঝড় আম্পান স্থাল ভাগে আঘাত করে অগ্রসর হয়েছিল। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের মেদনিপূর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে।
ঘুর্নিঝড় ডানা স্থাল ভাগে আঘাত করার ৬ থেকে ১২ ঘন্টা পূর্বে তার সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করার আশংকা করা যাচ্ছে কারণ ঐ সময় ঘুর্নিঝড়টি পুরো বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সবচেয়ে গরম পানির উপরে অবস্থান করার আশংকা করা যাচ্ছে।
—–> ঘুর্নিঝড় ডানা সমুদ্রে থাকা অবস্থায় খুবই তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Very Severe Cyclonic Storm (118–165 km/h) এর শক্তি অর্জন করার আশংকা করা যাচ্ছে।
—–> তবে স্থল ভাগে আঘাত করার সময় ঘুর্নিঝড়টি তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Severe Cyclonic Storm (89–117 km/h) হিসাবে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে।
আজ ২০ ই অক্টোবর তারিখের পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ডানা সম্বন্ধে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভব্য সময়: ২০ থেকে ২১ শে অক্টোবর
নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভব্য সময়: ২২ থেকে ২৩ শে অক্টোবর
গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভব্য সময়: ২২ থেকে ২৩ শে অক্টোবর
পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভব্য সময়: ২৩ থেকে ২৪ শে অক্টোবর
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য সময়: ২৩ শে অক্টোবর মধ্য রাতের পর থেকে ২৪ শে অক্টোবর মধ্য রাতের মধ্যে।
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান: ভারতের ওড়িশা রাজ্য ও বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার মধ্যবর্তী যে কোন উপকূলীয় এলাকা।
স্থল ভাগে আঘাতের সময় ঘুর্নিঝড় ডানা এর বাতাসের সম্ভব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ:
—> বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
——> বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
—–> ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১১০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার।
—-> ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার।
ঘুর্নিঝড়ের কারণে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা:
সাতক্ষীরা, খুলনা, ও বাগেরহাট জেলা: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ৭ থেকে ৮ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।
বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ৫ থেকে ৬ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।
নোয়াখালী, চট্টগ্রাম: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ২ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।
কক্সবাজার: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ২ থেকে ৪ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।
ঘুর্নিঝড়ের কারণে বিভিন্ন বিভাগে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ: ২৪ শে অক্টোবর থেকে ২৭ শে অক্টোবর পর্যন্ত
খুলনা বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
বরিশাল বিভাগ: ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার
রাজশাহী বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
ঢাকা বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
রংপুর বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
ময়মনসিংহ বিভাগ: ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
সিলেট বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুসারে সাম্ভব্য মোট বৃস্টিপাতের পরিমান (২৭ শে অক্টোবর রাত ১২ টা পর্যন্ত)
বঙ্গোপসাগরে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় “ডানা” সৃষ্টির আপডেট ৩: ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।