বৃহঃপতিবারের আবহাওয়া পূর্বাভাস: আজ থেকে প্রতিদিন শৈত্যপ্রবাহ অল্প-অল্প করে বাড়তে থাকবে ২০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত
বৃহঃপতিবার (১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩)
গত এক সপ্তাহ থেকে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশা আজ বৃহঃপতিবার প্রায় পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে সিলেট বিভাগের ২/১ টি জেলা ছাড়া। এই কুয়াশা বাংলাদেশের প্রবেশ করেছিল রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে ও বাংলাদেশ ত্যাগ করেছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে। প্রায় ১ সপ্তাহ স্থায়ী ছিলও এই কুয়াশা।
আজ বৃহঃপতিবার ভোর ৬ টার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে দেখা গেছে যে কুয়াশা অবস্থা বিরাজ করেছে মূলত সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ের মধ্যবর্তী সমতল এলাকায়। এছাড়া বাংলাদেশে আর কোন জেলার উপরে উল্লেখ যোগ্য পরিমাণে কুয়াশার উপস্থিতি দেখা যায় নি।দেশের যে কয়টি জেলার উপরে কুয়াশা ছিল আজ বৃহঃপতিবার তা আরও কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে আগামীকাল শুক্রবার।
আবহাওয়া সম্পর্কীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টার মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২/১ টি জেলার উপরে খুবই হালকা পরিমাণ কুয়াশার উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলা থেকে নতুন করে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা বিস্তার লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে আগামীকাল বুধবার সকাল ৭ টার সময় দেশের বিভিন্ন বিভাগে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতার সম্ভব্য মানচিত্র। এই মানচিত্রে যে সকল জেলার উপরে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতার মান ৯০ থেকে ৯৫% দেখাচ্ছে সেই সকল জেলার উপরে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যে সকল জেলার উপরে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতার মান ৯৫ থেকে ৯৮% দেখাচ্ছে সেই সকল জেলার উপরে খুবই ঘন কুয়াশার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৭ টার সময় দেশের বিভিন্ন বিভাগে দৃষ্টিসীমার সম্ভব্য মানচিত্র। এই মানচিত্রে যে সকল জেলার উপরে বেগুনি রং রয়েছে সেই সকল জেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ও ঐ সকল জেলায় দৃষ্টিসীমা সবচেয়ে কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে আজ বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টার সময় প্রায় পুরোদেশ কুয়ামুক্ত ছিলো।
ছবি: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে আজ বৃহঃপতিবার ভোর ৫ টার সময় বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের উপরে কুয়াশার মানচিত্র। (লালরং বেশি ঘন কুয়াশার পরিমাণ নির্দেশ করতেছে)
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের কুয়াশার চাদের ঢাকা থাকার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
রাত্রিকালীন নৌ যোগাযোগের জন্য বিশেষ কুয়াশা সতর্কতা
যখন অপেক্ষাকৃত গরম পানির উপর দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয় তখন কুয়াশার সৃষ্টি হয় যেমন করে শীতকালে মানুষ মুখ থেকে বাতাস ছাড়লে মুখনিঃসৃত গরম ও ভেজা বাতাস মুখের বাহিরে আসার পরে ধুয়ার সৃষ্টি করে ঠিক একই প্রক্রিয়ায় বড়-বড় নদীগুলোর উপরে রাত্রিকালীন কুয়াশা সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে যেহেতু আজ বৃহঃপতিবার থেকে দেশের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়া শুরু হয়েছে। ফলে আগামী ২০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সকল নদ-নদীতে রাতে চলাচলকারী সকল নৌযানকে সতর্কতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
আজ বৃহঃপতিবার থেকে দেশে শৈত্যপ্রবাহের ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়া শুরু হয়েছে
ও ২০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ বৃহঃপতিবার থেকে দেশের থেকে কুয়াশা অবস্থা বিদায় নিয়েছে। সেই সাথে আজ থেকে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে (রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে) দেশের অভ্যন্তরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহঃপতিবার ভোর ৬ টার সময় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় ভোর ৬ টার সময় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সম্ভব্য এই শৈত্যপ্রবাহ প্রতিদিনই অল্প-অল্প করে দেশের পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভব্য এই শৈতপ্রবাহ আগামী বুধবার (২০ শে ডিসেম্বর) পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিভাগের উপর দিয়ে অতিক্রম করে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যে উপর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভব্য এই শৈত্য প্রবাহের সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পাবনা জেলা ও রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ও ঠাকুরগাঁও জেলার উপরে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।