মঙ্গলবারের (অক্টোবর ৩১, ২০২৩) আবহাওয়া পূর্বাভাস

আজ ৩১ শে অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ১ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূউপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র (visible imagery, ব্যান্ড ৩, শূন্য দশমিক ৬৪ মাইক্রোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য) বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিাভগের উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপরে খুবই হালকা পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর আকাশে মেঘের কোন উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর উপরে খুবই হালকা পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত ঘটানোর মতো কোন মেঘের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে বায়ুচাপ মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ মঙ্গলবারও বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভূ-পৃষ্ঠের উপর বায়ুর উচ্চ চাপ অবস্থা বিরাজ করতেছে যা আকাশে মেঘ সৃষ্টি হতে বাধা প্রদান করতেছে। বাংলাদেশের ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আকাশে বায়ুর এই উচ্চ চাপ অবস্থা আগামী ১৬ ই নভেম্বর পর্যন্ত বিরাজ করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ফলে আগামী দুই সপ্তাহ দিনের বেলা আকাশ মেঘ মুক্ত থাকবে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠা-নামা করবে। তবে এই সময়ে বায়ুর আর্দতা খুবই কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যার কারণে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর উপরে থাকলেও অপেক্ষাকৃত নাতিশিতোষ আবহাওয়া অনুভূত হবে। পক্ষান্তরে রাতের বেলা আকাশ মেঘমুক্ত থাকার কারণে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাবে ও শীত অনুভূত হবে। সকালবেলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা পড়া শুরু করবে; ও সকাল বেলার তাপমাত্রা অনেক কম থাকবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার পর থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ৮ টার মধ্যে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

পশ্চিমবঙ্গের উপর বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস

আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার পর থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ৮ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।


ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১ টা বেজে ৪০ মিনিট এর সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের চিত্র বাংলাদেশের উপর


ছবি (১০.৪ µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য): কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রা। যে স্থানে তাপমাত্রা যত বেশি ঋনাত্নক সেই স্থানে মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে মেঘের মধ্যে বৃষ্টির পানির পরিমাণ তত বেশি।

ছবি (৭.৩ µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য): কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রা। যে স্থানে তাপমাত্রা যত বেশি ঋনাত্নক সেই স্থানে মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে মেঘের মধ্যে বৃষ্টির পানির পরিমাণ তত বেশি।

জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১০ নম্বর ব্যান্ড (7.3 µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য) এর বৈশিষ্ট্য ও আবহাওয়া-বিদরা কোন কাজে ব্যবহার করে থাকে?

জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১০ নম্বর ব্যান্ডটি (7.3 µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ব্যবহার করার হয় এই ব্যান্ডে) বাতাসে অবস্থিত জলীয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য ও নিম্ন মধ্য-স্তরের বায়ুমণ্ডলীয় প্রবাহ সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ব্যান্ড বায়ুমণ্ডলের মধ্যম স্তরে অবস্থিত মেঘ এবং মেঘের মধ্যে অবস্থিত জলীয় বাষ্প থেকে নির্গত বিকিরণের পরিমাণ পরিমাপ করে মেঘের এই চিত্র তৈরি করে থাকে। আবহাওয়া পূর্বাভাস-বিদরা এই চিত্রটি ব্যবহার করে থাকেন বায়ুমণ্ডলের মধ্যম স্তরে অবস্থিত জ্বলিয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য যেমন মেঘের প্রবাহের বৈশিষ্ট্য যেমন মেঘ কোন দিকে থেকে কোন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে, বায়ু কোন দিক থেকে কোন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে, এবং এই বায়ু প্রবাহের মধ্য দিয়ে চলমান স্বল্প দৈর্ঘ্যের তরঙ্গ এর উপস্থিতি ও সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু এই ব্যান্ড প্রায় ৪০০ মিলিবার বায়ুচাপ উচ্চতায় বায়ুপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করতে পারে তাই এই চিত্র ব্যবহার করে জেট স্ট্রিক বা জেট বায়ুপ্রবাহ এর বৈশিষ্ট্য সনাক্ত করতে সাহায্য করে। 

জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১৬ টি ব্যান্ড বা চ্যানেলের মধ্যে ৩ টি ব্যান্ড ব্যবহার করা হয় বায়ুমণ্ডলের অবস্থিত জ্বলিয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য। এর মধ্যে ১০ নম্বর ব্যান্ড যা 7.3 µm দৈর্ঘ্যের তরঙ্গ ব্যবহার করে। এই ব্যান্ডকে “নিম্ন-স্তরের জলীয় বাষ্প” ব্যান্ড বলা হয়ে থাকে। এই ব্যান্ডের মাধ্যমে সাধারণত মেঘমুক্ত অঞ্চলে, ও মিডট্রোপোস্ফিয়ারের মধ্যে ( 500-750 hPa), নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ারিক বায়ু ট্র্যাক করতে, জেট স্ট্রিক সনাক্ত করতে ও মনিটর করতে ব্যবহৃত হয়। কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা, নিম্ন স্তরের বায়ুর সম্ভব্য আর্দ্রতা (বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত আর্দ্রতার উল্লম্ব প্রোফাইল নির্ণয়ের জন্য), কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনাযুক্ত অঞ্চল চিহ্নিত করন, বায়ুর মধ্যে অশান্তি বিদ্যমান, ও আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ধুয়ার কুঁদুলির মধ্যে অবস্থিত সালফার ডাই অক্সাইড (SO2) সমৃদ্ধ বায়ু, এবং লেক এর প্রভাবে সৃষ্ট মেঘ ও তুষার এর ব্যান্ড ট্র্যাক করে।

নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত  আবহাওয়া পূর্বাভাস

আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর  উপর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা নাই। নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর উপর দিয়ে, অতি বৃষ্টি, তাপ-প্রবাহ, কিংবা শৈত্য প্রবাহের মতো বিরূপ আবহাওয়া অতিক্রম করার কোন সম্ভাবনা নাই বলেই চলে। 

ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী

 ১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্‌কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।

২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না। 

About the Author

Mostofa Kamal Palash

Founder & Lead Meteorologist

Mostofa Kamal Palash is pursuing his Ph.D. in the School of Environment and Sustainability at the University of Saskatchewan, Saskatoon, Canada. Mostofa obtained his MSc from the department of Earth and Environmental Sciences at the University of Waterloo, Waterloo, Ontario, Canada. Mostofa’s MSc Thesis title was “A Comprehensive Sensitivity Analysis of the Weather Research and Forecasting (WRF) Modeling System over Southern Ontario, Canada”. Mostofa completed a Post Graduate Diploma in Earth System Physics from the Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP), Trieste, Italy. His diploma thesis title was "Climate Sensitivity of Land-Use Change over South Asia Using the RegCM3 Modeling System." Mostofa also obtained an MSc in Physics from Shahjalal University of Science and Technology (SUST), Bangladesh. His MSc thesis title was "Seasonal Variation of Sensible and Latent Heat Flux Tendency in Bangladesh." Lastly, Mostofa completed his Bachelor of Science in Physics from (SUST), Bangladesh.

View All Articles