ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম স্থল ভাগের উপরে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে: ৬ ও ৭ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা
ঘূর্ণিঝড় আপডেট ১৮ (ডিসেম্বর ৬, ২০২৩)
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ( “MICHAUNG” (PRONOUNCED AS MIGJAUM)) স্থল ভাগে প্রবেশ করার পরে শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আজ বুধবার দুপুর ১২ টার সময় ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের উপরে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিকে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট ঘন মেঘে ঢেকে গেছে ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ও বাংলাদেশের আকাশ। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর প্রভাবে আজ বুধবার ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর সর্বশেষ অবস্থানের মানচিত্র।
এখানে উল্লেখ্য যে ২০২৩ সালে উত্তর ভারত মহাসাগরে (বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর নিয়ে গঠিত) ঘূর্ণিঝড় মৌসুমে সৃষ্টি হওয়া ৮ম পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় এটি। গত ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলও ২০২৩ বছরে। এই ২০২৩ সালেই বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করেছে ৩ টি ঘূর্ণিঝড় যা বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে কোন এক ঘূর্ণিঝড় মৌসুমে আঘাত হানা সর্বোচ্চ সংখ্যক ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম শেষ হতে আরও ১ মাস অবশিষ্ট রয়েছে। অশাংকা করা হচ্ছে ২০২৩ সালে গত ৫০ বছরের ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির রেকর্ড ভঙ্গ করবে।
বাংলাদেশের উপরে ঘূর্ণিঝড় “মিগজাউম” এর প্রভাব
জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত মেঘের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ বুধবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর কারণে সৃষ্ট মেঘে ঢাকা রয়েছে বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলা।
ঘূর্ণিঝড় “মিগজাউম” এর প্রভাবে আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহঃপতিবার পুরো বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন সময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। আজ বুধবার বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামীকাল বৃহঃপতিবার দেশব্যাপী বৃষ্টিপাত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে আজ ও আগামীকাল মিলে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা বিভাগের উত্তরের জেলাগুলো, ময়মনিসংহ, সিলেট, ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৮ই ডিসেম্বরও দেশের কোন-কোন জেলার উপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর ২ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, পাবনা জেলার উপর হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আজ মধ্য রাতের পর থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় “মিগজাউম” এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর উপরে। বিশেষ করে রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা বিভাগে উত্তরের জেলাগুলো, চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরে। মডেলগুলো নির্দেশ করতেছে যে আগামীকাল ৭ ই ডিসেম্বর প্রায় পুরো দেশের উপরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর উপরে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার ও রংপুর, ময়মনিসংহ, ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ১০ থেকে ৩০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপরে বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোর উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
ছবি: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত রাডার হতে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর বৃষ্টিপাত এর মানচিত্র।
ছবি: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত রাডার হতে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর রিফলেকটিভিটি মানচিত্র।
ছবি: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত রাডার হতে প্রাপ্ত চিত্র অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এর বাতাসের গতিবেগ এর মানচিত্র।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।