সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল আপডেট ১৪ (২৫ শে মে, সকাল ১০ টা, ২০২৪): ঘূর্ণিঝড় রেমাল কিছুটা শক্তিশালি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে

ঘূর্ণিঝড় রেমাল কিছুটা শক্তিশালি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। পূর্বে নির্দেশিত প্রবল শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় (Severe Cyclonic Storm) থেকে কিছুটা শক্তিশালি হয়ে অতি প্রবল শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় (Very Severe Cyclonic Storm) মে পরিণত হতে পারে।

উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার (পূর্বে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাস নিয়ে উপকূলে আঘাত করার কথা বলা হয়েছিল) ও দমকা হাওয়া সহ ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। পূর্বে ১৪০ কিলোমিটার দমকা বাতাসর কথা পূর্বাভাস করা হয়েছিল)।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল তার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালি, ভোলা জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করার প্রবল সম্ভাবনা (৯০ % এর বেশি) দেখা যাচ্ছে।   

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর সর্বশেষ অবস্থা (২৫ শে মে সকাল ৯ টা বেজে ৩০ মিনিট পর্যন্ত)

আজ শনিবার সকাল ৯ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত মেঘের ঘূর্ণনের চলমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র প্রায় ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯ দশমিক ৭ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপর অবস্থান করছিল। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে ও কোলকাতা থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার আজ সকাল ৬ টার সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের চার-পাশে ঘন্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহের প্রমাণ পেয়েছে।

 

সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা জেলার উপকূলীয় সকল মানুষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে হবে

বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস যদিও নির্দেশ করতেছে যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার সকালের পর থেকে উপকূলে আঘাত করার শুরু করার সম্ভাবনার কথা। তবে ঘূর্ণিঝড় অনেক সময় হঠাৎ করে গতি বৃদ্ধি করে ৩ থেকে ৬ ঘন্টা পূর্বেই উপকূলে আঘাত করার উদাহরণ দেখা গেছে অতিতে।

আজ শনিবার সন্ধ্যার পূর্বেই পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আজ শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়টি সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতে প্রায় সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। আজ শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষদের আজ শনিবারই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে যেহেতু রবিবার সকাল থেকে পুরো দমে বৃষ্টি পরা শুরু করবে সেই সাথে জোয়ারের কারণে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হবে।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে আগামীকাল রবিবার দিবাগত রাত ৩  টার সময় ঘন্টায় প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হওয়া প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে। 

রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে ঘন্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পিরোজপুর, ও পটুয়াখালি জেলার উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে। রবিবার দুপুরের মধ্যে অবশ্যই সকল মানুষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।  

নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপর দিয়েও ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে বাতাসের গতিবেগ অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও এই দুই এলাকার উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে আগামীকাল রবিবার রাত ৮ টার সময় ঘন্টায় প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হওয়া প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে। 

 

ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে উপকূলীয় এলাকা কত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে?

ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেহেতু পূর্ণিমা রাতের মাত্র ৩ দিন পরে উপকূলে আঘাত করবে তাই চন্দ্র-সূর্য ও পৃথিবীর মিলিত শক্তির কারণে স্বাভাবিক ভাবেই জোয়ার-ভাটার পানির উচ্চতা বেশি থাকবে। এর সাথে যুক্ত হবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব। ঘূর্ণিঝড় রেমাল যদি জোয়ারের সময় উপকূল অতিক্রম করে তবে স্থান ভেদে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ও ভাটার সময় উপকূল অতিক্রম করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। 

 

 

 

ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী

 ১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্‌কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।

২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না। 

About the Author

Mostofa Kamal Palash

Founder & Lead Meteorologist

Mostofa Kamal Palash is pursuing his Ph.D. in the School of Environment and Sustainability at the University of Saskatchewan, Saskatoon, Canada. Mostofa obtained his MSc from the department of Earth and Environmental Sciences at the University of Waterloo, Waterloo, Ontario, Canada. Mostofa’s MSc Thesis title was “A Comprehensive Sensitivity Analysis of the Weather Research and Forecasting (WRF) Modeling System over Southern Ontario, Canada”. Mostofa completed a Post Graduate Diploma in Earth System Physics from the Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP), Trieste, Italy. His diploma thesis title was "Climate Sensitivity of Land-Use Change over South Asia Using the RegCM3 Modeling System." Mostofa also obtained an MSc in Physics from Shahjalal University of Science and Technology (SUST), Bangladesh. His MSc thesis title was "Seasonal Variation of Sensible and Latent Heat Flux Tendency in Bangladesh." Lastly, Mostofa completed his Bachelor of Science in Physics from (SUST), Bangladesh.

View All Articles