ঘূর্ণিঝড় (সম্ভব্য) রেমাল আপডেট ১২ (শুক্রবার, ২৪ শে মে, ২০২৪): ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাতের আশংকা ২৬ শে মে
আজ ২৪ শে মে বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাসের মডেল থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য অনুসারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে ২৭ শে মে দুপুর ১২ টার মধ্যে।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে আজ ২৪ শে মে, দুপুর ২ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত মেঘের মানচিত্র।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর দপ্তর আজ সকাল ১০ টার দিকে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর একটি সম্ভব্য গতিপথ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের বাম দিকের সামান্য কিছু অংশ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপর দিয়ে ও বেশিভাগ অংশ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করতে পারে। অধিকন্তু, ঘূর্ণিঝড় রেমাল স্থল ভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ১১১ কিলোমিটার। এখানে উল্লেখ্য যে আবহাওয়া ডট কমে প্রকাশিত ২১ শে মে এর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল যে ঘূর্ণিঝড় রেমাল ২৬ শে মে বরিশাল বিভাগের উপকূলের উপর দিয়ে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনার কথা।
ছবি কৃতজ্ঞতা: ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর সর্বশেষ অবস্থা (২৪ শে মে দুপুর ২ টা পর্যন্ত)
গত ২২ শে মে দক্ষিণ মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘু চাপ সৃষ্টি হয়েছে যা গতকাল ২৩ শে মে সুস্পষ্ট লঘু চাপ পরিণত হয়েছিল। এই সুস্পষ্ট লঘু চাপটি আজ শুক্রবার সকালে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১ টার সময় জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত নিম্নচাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া মেঘের ঘূর্ণনের চলমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ দুপুর ১ টার সময় নিম্নচাপটির কেন্দ্র প্রায় ১৬ দশমিক ১ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯ দশমিক ২ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপর অবস্থান করছিল। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র খেপুপাড়া থেকে ৬৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ও কোলকাতা থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার আজ সকাল ৬ টার সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের চার-পাশে ঘন্টায় প্রায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহের প্রমাণ পেয়েছে।
নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে যেহেতু ঐ দিকে বায়ুশিয়ারের মান খুবই অনুকূল অবস্থায় রয়েছে। আজ শুক্রবার মধ্য রাতের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে ও আগামীকাল শনিবার সকাল ৯ টার মধ্যে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপ থেকে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পরে ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে রেমাল (মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া নাম)।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে আজ ২৪ শে মে, দুপুর ২ টা বেজে ৪৫ মিনিটের সময় প্রাপ্ত মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রার মানচিত্র। যে স্থানে মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রা যত বেশি ঋনাত্নক সেই স্থানে মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে তত বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে।
বিশ্বের প্রধান-প্রধান দুইটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম মডেল নির্দেশিত উপকূলে আঘাতের স্থান ও সময়ের পার্থক্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টি কি পরিমাণ শক্তিশালি হতে পারে ও উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ কত হতে পারে তা নিয়ে বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের মধ্যে এখনও কিছু পার্থক্য রয়েছে। তবে, এখানে উল্লেখ্য যে ঘূর্ণিঝড়ের স্থল ভাগে আঘাতের স্থান ও সময় বিষয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সঠিক পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বা ECMWF Integrated Forecasting System (IFS)। তাই আজকের আপডেটে শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম মডেল নির্দেশিত উপকূলে আঘাতের চিত্র যোগ করা হলও।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল আগামী ২৬ শে মে (রবিবার) সকাল ৬ টার পর থেকে ২৭ শে মে দুপুর ১২ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকা, খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো এবং বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা নির্দেশ করতেছে। (২৪ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল কোন দিন ও কোন সময়ে উপকূলে আঘাত করতে পারে?
ঘূর্ণিঝড় রেমাল আগামী ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে ২৭ শে মে দুপুর ১২ টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করা শুরু করতে পারে সকাল ৬ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ শে মে সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে রাত রবিবার দিবাগত রাত ৩ টার পর থেকে সোমবার, ২৭ শে মে দুপুর ১২ টার মধ্যে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করা শুরু করাকে ঘূর্ণিঝড় স্থল ভাগে আঘাত করা হিসাবে গণ্য করে থাকে। ফলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞা অনুসারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলে আঘাত করা শুরুর সম্ভব্য সময় রবিবার মধ্যরাতের পর থেকে।
ছবি বর্ণনা: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় রেমালের সাম্ভব্য গতিপথ ও স্হল ভাগে আঘাতের সাম্ভব্য স্হান।
এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র সাধারণ মেঘমুক্ত অবস্থায় থাকে ও সেখানে বায়ুর গতিবেগ থাকে সর্বনিম্ন। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র অতিক্রমের সময় বৃষ্টিপাতও হয় সর্বনিম্ন পরিমাণে। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ যখন থেকে উপকূলে আঘাত করা শুরু করে তখন গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে ও বৃষ্টিপাতের প্রমিনা ক্রমাগত ভাবে বাড়তে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত-না ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র স্থল ভাগে প্রবেশ করা শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র পুরোপুরি উপকূলের উপর উঠে যাওয়ার পরে হঠাৎ করে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয় ও সময় বৃদ্ধির সাথে-সাথে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্ত পুরোপুরি স্থল ভাগ অতিক্রমের পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে ঘুর্নয়য়মান মেঘের কারণে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ ও সর্বোচ্চ গতিবেগ কেমন হতে পারে?
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া সহ ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। দমকা হাওয়া সবচেয়ে বেশি অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো এবং চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী ও ফেনী জেলার উপকূলীয় এলাকার উপজেলাগুলোর উপরে।
ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে উপকূলীয় এলাকা কত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে?
ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেহেতু পূর্ণিমা রাতের মাত্র ৩ দিন পরে উপকূলে আঘাত করবে তাই চন্দ্র-সূর্য ও পৃথিবীর মিলিত শক্তির কারণে স্বাভাবিক ভাবেই জোয়ার-ভাটার পানির উচ্চতা বেশি থাকবে। এর সাথে যুক্ত হবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব। ঘূর্ণিঝড় রেমাল যদি জোয়ারের সময় উপকূল অতিক্রম করে তবে স্থান ভেদে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ও ভাটার সময় উপকূল অতিক্রম করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
কোন সময়ের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিলে প্রানহানী কিংবা ক্ষতির ঝুঁকি সর্বনিম্ন পরিমাণে থাকবে?
বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস যদিও নির্দেশ করতেছে যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার সকালের পর থে উপকূলে আঘাত করার শুরু করার সম্ভাবনা। তবে ঘূর্ণিঝড় হঠাৎ করে গতি বৃদ্ধি করে ৩ থেকে ৬ ঘন্টা পূর্বেই উপকূলে আঘাত করতে পারে যেহেতু আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়টি সোজা উত্তর দিয়ে অগ্রর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতে প্রায় সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। ফলে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষদের আগামীকাল শনিবারই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে যেহেতু রবিবার সকাল থেকে পুরো দমে বৃষ্টি পরা শুরু করবে। রবিবার দুপুরের মধ্যে অবশ্যই সকল মানুষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের উপরে কবে থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে ও কত দিন পর্যন্ত চলতে পারে?
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বাংলাদেশে উপরে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে আজ ২৪ শে মে থেকে যা ২৮ শে মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের উপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৫, ২৬ ও ২৭ শে মে। সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৬ ও ২৭ শে মে। অপেক্ষাকৃত হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের ২৪ ও ২৮ তারিখে।
ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের কোন বিভাগের উপরে কি পরিমাণে বৃষ্টি শুরু হতে পারে ২৪ থেকে ২৮ এ মে এর মধ্যে?
খুলনা বিভাগ: ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার
বরিশাল বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
ঢাকা বিভাগ: ২০০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার [পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের জেলাগুলোর উপরে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার ও ঢাকার উত্তর ও পূর্ব পাশের জেলাগুলোর উপরর ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার]
চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
রাজশাহী বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
ময়মনিসংহ বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
সিলেট বিভাগ: ১৫০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
রংপুর বিভাগ: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কারণে ২৮ শে মে সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ (২৪ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।
২৪ শে মে এর আবহাওয়া পূর্বাভাসের সারাংশ বা উল্লেখযোগ্য মূল্যবান তথ্য সমূহ
——> ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর বাম দিকের সামান্য অংশ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও মেদিনীপুর জেলা ও বেশিভাগ অংশ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা বেশি।
—-> ঘূর্ণিঝড় রেমাল ২৬ শে মে সকাল ৬ টার পর থেকে ২৭ শে মে দুপুর ১২ টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
—–> ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপরে ৩০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ শে মে থেকে ২৮ এ মে এর মধ্যে।
—–> সর্বোচ্চ পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, মাগুরা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, যশোর, ঝিনাইদহ জেলার উপরে।
—–> ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে তবে উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি ও ভাটার সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।
—–> ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাতের সময় খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপরে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া (wind gust) সহ ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সাম্ভ্য ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা
কৃষকদের জন্য পরামর্শ
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বৃষ্টি ২৮ শে মে তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের কৃষকদের অনুরোধ করবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার জন্য। জমিতে পাকা ধান থাকলে তা কেটে মড়াই করাে জন্য। শাক-সবজির জমিত যেন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জামা হওয়া বৃষ্টির পানি জমে শস্যের ক্ষতি না করে।
সমুদ্র-গামী জেলেরা কোন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে?
আজ ২৪ শে মে থেকে থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্র খুবই ভয়ংকর অবস্থায় থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার লবণ চাষিদের জন্য পরামর্শ কি?
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকার লবনচাষিদের জানানো যাচ্ছে যে বৃষ্টি ২৮ শে মে তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাঠে থাকা সকল লবণ আগামীকাল ২৫ শে মে তারিখের মধ্যে তুলে ফেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
উপকূলীয় এলাকার বাণিজ্যিক মৎসচাষীদের জন্য পরামর্শ:
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকুলে আঘাত করার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ (ভাটার সময়) থেকে ১০ ফুট (জোয়ারের সময়) বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশংকা করা যাচ্ছে। মৎসচাষীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার পরামর্শ রইলো।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।