রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের একাধিক জেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে যাচ্ছে আজ শুক্রবার থেকে।
বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত নদ-নদীগুলোর পানি-প্রবাহের সর্বশেষ (১৪ ই জুলাই, ২০২৩) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে গতকাল বৃহঃপতিবার রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের শুধুমাত্র নীলফামারী জেলার তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ও কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ৫০ থেকে বেশি ও ১০০ সেন্টিমিটারের কম উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পক্ষান্তরে আজ শুক্রবার বিভিন্ন নদীর ১০ টি পয়েন্টে পানি বন্য সতর্কতা কিংবা বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নীলফামারী জেলার তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ও কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপেজালার দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে শূন্য থেকে ১ মিটার উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামীকাল শনিবার বন্যার পানিতে জামালপুর ও বগুড়া জেলার অনেক উজেলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
ছবি: বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর পানি-প্রবাহের সর্বশেষ চিত্র। (জুলাই ১৪, ২০২৩)
আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ শুক্রবার দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘু চাপ সৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যের উপর একটি পশ্চিমা লঘুচাপ অবস্থান করতেছে। সমুদ্রের উপর সৃষ্টি হওয়া লঘু চাপের কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে গরম ও জ্বলিয় বষ্পযুক্ত বাতাস উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। একই সময়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বিবাহার রাজ্যের উপরে অবস্থান করা স্থল ভাগের লঘু চাপটির কারণে বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। দুই লঘু চাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া বায়ু সংঘর্ষ করতেছে হিমায়ল পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের জেলাগুলোর উপরে। উপরোক্ত আবহাওয়া সম্পর্কিত কারণে আগামী সোমবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের জেলাগুলোর ও পূর্বভারতীয় রাজ্যগুলোতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ফলে আশংকা করা যাচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর উত্তর-পশ্চিম বঙ্গের সকল জেলা ও সিকিম রাজ্যের উপর খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে।
উপরে উল্লেখিত বৃষ্টির প্রায় পুরোটাই রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলাগুলোর নদীগুলোর উপর দিয়ে তিস্তা নদী ও ব্রক্ষমপুত্র নদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে পৌঁছাবে। ফলে অনেক আজ শুক্রবার যে তিস্তা, ব্রক্ষ্রমপুত্র, ও যমুনা নদীর উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকবে আজ শুক্রবার থেকে।
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় বুধবার ৭৮ মিলিমিটার ও বৃহঃপতিবার ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় বুধবার ১১৮ মিলিমিটার (স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০০% বেশি) ও বৃহঃপতিবার ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার উত্তর সিকিম রাজ্যে ১৩২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যা স্বাভাবিকের চয়ে ৯২৬% বেশি। গতকাল বৃহঃপতিবার পুরো সিকিম রাজ্যে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। অস্বাভাবিক এই বৃষ্টির প্রতিটি ফোটা পানি রংপুর বিভাগের নদীগুলো দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করেছে ইতিমধ্যে ও নদ-নদীগুলোর পানি আগামী ১ সপ্তাহ বৃদ্ধি পেতে থাকার আশংকা করা যাচ্ছে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।