বুধবারের (জানুয়ারি ৩) আবহাওয়া পূর্বাভাস: দেশব্যাপী চলমান কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা 

কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ বুধবার সকাল ৬ টার সময় দেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে ৬৩ টি জেলার উপরে বিভিন্ন ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি ছিল। সকাল ৬ টার সময় শুধুমাত্র সাতক্ষীরা উপরে কুয়াশার উপস্থিতি ধরা পড়েনি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে। আজ বুধবার সকালে পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের বেশিভাগ জেলাগুলোর উপরে। আজ সকালে অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের একাধিক জেলা গুলোর উপরে। তবে খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ৬ টায়) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে। 

সকাল ১১ টার কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজ প্রায় সারাদিন ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে সূর্যের আলো দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, ও রংপুর বিভাগের অনেক জেলার উপর থেকে কুয়াশা দূর হয়ে সূর্যের আলো দেখা গেছে; তবে যে সকল জেলার সকাল ১১ টার সময় পর্যন্ত কুয়াশা রয়েছে তা দুপুর ২ টার মধ্যে সরে গিয়ে সূর্যের আলো দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ২ টার পরে।

চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ৩ টার পরে।

রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর, ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১ টার পরে।

আজ বুধবার সূর্যের আলো দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ময়মনসিংহ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষমণবাড়িয়া জেলার উপরে।

 বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা পূর্বাভাস

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে বৃহঃপতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত দেশের ৮ টি বিভাগের বেশিভাগ জেলার (৬৪ টির মধ্যে ৬০ টির উপরে) উপরে বিভিন্ন ঘনত্বের কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ রাতে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাঁদেরে ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা বিভাগের জেলাগুলো।

আজ বুধবার দিবাগত রাতে (পুরো রাত) খুবই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল সড়ক ও মহাসড়ক।

আজ বুধবার দিবাগত রাতে (পুরো রাত) খুবই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও বরিশাল বিভাগের সকল নৌপথ।

দেশের উল্লেখযোগ্য শহর ও স্থানগুলোতে মঙ্গলবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড

আজ বুধবার সকাল ৬ টার সময় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশালে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। 

দেশব্যাপী চলমান কুয়াশা শুক্রবার (৫ ই জানুয়ারি) পর্যন্ত ও শৈত্যপ্রবাহ (৭ ই জানুয়ারি) অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ১১ টায়) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে। 

ছবি: আগামীকাল  বৃহঃপতিবার সকাল ৬ টার সময়কার কুয়াশার সম্ভাব্যতার মানচিত্র, আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম “ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স” (যে স্থানে রং যত বেশি লাল সেই স্থানে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি)। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স এর মান ৩১ এর কম হলে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা; ৩১ থেকে ৫৫ এর মধ্য থাকলে হালকা থেকে মাঝারি মানের কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা ও ৫৫ এর বেশি হলে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম নির্দেশ করে।

আগামী ৩ দিনের (শুক্রবার পর্যন্ত) কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ পূর্বাভাস

আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখের পূর্বাভাস অনুসারে দেশব্যাপী চলমান কুয়াশার পরিমাণ কমতে শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখের পর থেকে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে মঙ্গলবার (জানুয়ারি ৩) ও বুধবারের (জানুয়ারি ৪) কুয়াশা পূর্বাভাস

আজ বুধবার ও ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের বেশিভাগ রাজ্য মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। আজ বুধবার সকাল ৬ টার সময় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের বেশিভাগ জেলা ও মধ্য ও দক্ষিণ ভাগের একাধিক জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। বিশেষ করে দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও।

আজ বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল বৃহঃপতিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের বেশিভাগ জেলার উপরে আবারও মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনা খুবই বেশি যে আগামীকাল বৃহঃপতিবার পশ্চিমবঙ্গে সর্ব উত্তরের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উপরে দুপুর ১২ টার পূর্বে সূর্যের আলো দেখতে না পাওয়ার।

গত ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের সকল রাজ্য ভারি কুয়াশার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে তা আজ জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে অনেক রাজ্যের উপরে। ভারি থেকে খুবই ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রাজ্যে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। দিল্লী, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বিমান বন্দরগুলোতে শত-শত ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে বিমান চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিসীমার অভাবে।

তবে আজ বুধবার ভারত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সকাল ৬ টা থেকে সকাল ১১ টার মধ্যে প্রাপ্ত বিভিন্ন চিত্রে (Visible, Dust RGB and Day Microphysics) দেখা গেছে যে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের ভারতীয় রাজ্যগুলোর উপরে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমে এসেছে গতকাল মঙ্গলবার অপেক্ষা।

ভারত, জাপান ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সেন্সর দ্বারা সংগৃহীত কুয়াশার চিত্র ৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪।