তাপপ্রবাহ পূর্বাভাস (জুন ৫, ২০২৩): তাপপ্রবাহ চলার সম্ভাবনা ১৪ ই জুন পর্যন্ত; সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস

মে মাসের ৩০ তারিখের পর থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে গরম ও শুষ্ক বাতাস অতিক্রম করা শুরু করেছে (তাপপ্রবাহ)। জুন মাসের ৬ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া মেহেরপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা রাজশা নাটোর, ও পাবনা জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। 

ছবি: ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে জুন মাসের ৯ তারিখে রাজশাহি বিভাগের কোন কোন জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত।

জুন মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের (চট্টগ্রাম, পার্বত্যচট্টগ্রামের সকল জেলা ও কক্সবাজার জেলায়) ছাড়া দেশের অন্য কোন বিভাগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম।  

বাংলাদেশের উপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র মানের তাপ প্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে জুন মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত। সাধারণত, কোনও বিস্তৃত এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি থাকলে মৃদু, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি থাকলে মাঝারি এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে। 

তীব্র তাপপ্রবাহ: জুন মাসের ৭ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপর

মাঝারি তাপপ্রবাহ: জুন মাসের ৬ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপর

মৃদু তাপপ্রবাহ: জুন মাসের ৬ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ঢাকা ও ময়মনসিংহ, বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপর। জুন মাসের ১৪ তারিখে শুধুমাত্র খুলনা বিভাগের কোন-কোন জেলাগুলোর উপর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। 

বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা:

১) জুন মাসের ৮ তারিখের পর থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জেলা ও কক্সবাজার জেলার উপর প্রায় প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত্র পর্যন্ত বজ্র সহ বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মধ্যরাত্রির পর থেকে সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ টি জেলায় চট্টগ্রাম বিভাগের (চট্টগ্রাম, পার্বত্যচট্টগ্রামের সকল জেলা ও কক্সবাজার জেলায়)।

২) জুন মাসের ১০ তারিখের পর থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মধ্য রাত্রির পর থেকে সকাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপর বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

৩) জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে জুন মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত পুরো-দমে শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ সোমবার জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে বাংলাদেশের আকাশে খুবই কম পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বঙ্গোপসাগর থেকে জলিয় বাষ্প যুক্ত বাতাস রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিাভগের উপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থল ভাগের উপর প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে দেশের সকল জেলায় বায়ুর আর্দ্রতা ৪০ থেকে ৮০ % বিরাজ করতেছে।

জুন মাসের এই সময়টিতে সূর্য ঠিক বাংলাদেশের উপর অবস্থান করে। যার কারণে দিনের বেলা সূর্য শক্তি বাংলাদেশের উপরের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতেছে। দিনের গতকাল সোমবার দেশের বেশিভাগ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ছিলও ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। এপ্রিল মাসে দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপ-প্রবাহ অপেক্ষা দেশের তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও মানুষ অস্বস্তিকর অনুভব করার মূল কারণ হলও পুরো দেশের উপর বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৪০% থেকে ৮০ % বিরাজ করা। যে কারণে মানুষের শরীর থেকে ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে না। ফলে মানুষের শরীর তাপ ত্যাগ করে ঠাণ্ডা হতে পড়তেছে না। যা কারণে মানুষ অনেক বেশি অস্বস্তি অনুভব করতেছে ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেই।