রবিবারের (এপ্রিল ২১, ২০২৪) আবহাওয়া পূর্বাভাস: সিলেট ও চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য ৬ টি বিভাগে তাপ-প্রবাহ অব্যাহত থাকার আশংকা।
তাপ-প্রবাহ পূর্বাভাস: দেশব্যাপী প্রাণঘাতী তাপ-প্রবাহের আশংকা
আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আগামী ৩০ ই এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। বাংলাদেশের সিলেট বিভাগ ছাড়া অন্য ৭ টি বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বিচ্ছিন্ন ভাবে কোন-কোন জেলার উপরে সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ফলে আগামী ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে তাপ-প্রবাহ অতিক্রমের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপ-প্রবাহ ও রংপুর, ঢাকা, ময়মনিসংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে মধ্যম তাপ-প্রবাহ অতিক্রমের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। এই সময়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নিয়মিতই ৪০ থেকে ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠার আশংকা করা যাচ্ছে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। আজ রবিবার রাজশাহী, রংপুর, ও খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, ও ময়মনিসংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে প্রচণ্ড তাপ-প্রবাহ অব্যাহত থাকার আশংকা করা যাচ্ছে।গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস উঠেছে যশোর জেলায়। আশংকা করা যাচ্ছে আজ রবিবার খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি থাকার সম্ভাবনা। বিশেষ করে খুলনা বিভাগের যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, পাবনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি থাকার আশংকা করা যাচ্ছে।
আজ রবিবার, ২১ ই এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নিম্নরূপ উঠার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে:
১) যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, খুলনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পাবনা, রাজশাহী, জেলায় ৪২ থেকে ৪৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস
২) ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, নড়াইল, মাগুরা, পিরোজপুর, বরগুনা, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সিগন্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাগুরা, নড়াইল ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস
৩) বরিশাল, বরগুনা, চাপাই নবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, নওগাঁ, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস
৪) বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোর তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস
৫) পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জেলায় ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস
৫) রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ৩৩ থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস,
৬) সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস,
আজ রবিবার বিভাগ ভিত্তিক বিস্তারিত পূর্বাভাস নিচে উল্লেখ করা হলও:
সিলেট বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপর দিয়ে একাধিকার বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি অতিক্রম করার আশংকা করা যাচ্ছে। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা, ও সিলেট জেলার কোম্পানিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার উপরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার উপরে প্রবেশের সম্ভাবনা বেশি। আগামী ১০ দিন প্রায় প্রতি রাতেই সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর উপরে বজ্রপাত সহ হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: আজ রবিবার সকাল ১১ টা বেজে ২০ মিনিট সময়কার জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান মানচিত্রে বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর আকাশে হালকা পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশপরগান জেলা ছাড়া অন্য সকল জেলার আকাশ মেঘমুক্ত অবস্থায় রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, খাগড়াছড়ি, উত্তর চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, কক্সবাজার জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের আশংকা অপেক্ষাকৃত বেশি দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবন জেলার উপরে। চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর আকাশে হালকা পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি থাকার কারণে দেশের অন্যান্য বিভাগ অপেক্ষা তাপ প্রবাহের প্রভাব কিছুটা কম অনুভূত হবে।
ঢাকা বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় অতিক্রম করা কিংবা বৃষ্টিপাত অতিক্রমের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
ময়মনিসংহ বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ সামান্য পরিমাণে বৃষ্টিপাতের কিছু সম্ভাবনা রয়েছ।
বরিশাল বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় অতিক্রম করা কিংবা বৃষ্টিপাত অতিক্রমের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
রংপুর বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় অতিক্রম করা কিংবা বৃষ্টিপাত অতিক্রমের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
রাজশাহী বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় অতিক্রম করা কিংবা বৃষ্টিপাত অতিক্রমের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
খুলনা বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় অতিক্রম করা কিংবা বৃষ্টিপাত অতিক্রমের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে বৃষ্টিপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস
কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত মেঘের চিত্র, আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন মানচিত্র ও আবহাওয়া মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে আজ রবিবার পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের সকল জেলার উপরে তীব্র তাপ-প্রবাহ বিরাজ করার আশংকা করা যাচ্ছে।
সিলেটের হাওর এলাকায় পাহাড়ি ঢলের আশংকা
দেশে চলমান তীব্র তাপ-প্রবাহের মধ্যেও সিলেট বিভাগের হাওড় এলাকায় পাহাড়ি ঢলের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আগামী ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত
বাংলাদেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি ও খাসি হিল এলাকা, আসামের করিমগঞ্জ জেলা ও মনিপুর রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় প্রায় প্রতি দিন রাতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির প্রবল আশংকা। আগামী ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। উল্লেখিত পূর্বাভাস সঠিক হলে বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলো দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাওর এলাকায় পৌঁছানোর আশংকা করা যাচ্ছে। ফলে সিলেট বিভাগের হাওড় এলাকার বিলগুলো পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার হাওড় এলাকার নিচু বিলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
তীব্র তাপ প্রবাহ থেকে রক্ষার জন্য কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার?
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
উপরে উল্লেখিত বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস সম্ভাবনা মাত্র। কোন স্থানে বৃষ্টিপাত আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক শর্ত পূরণের উপর নির্ভর করে। বিভিন্ন বিভাগে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভব্য সময় থেকে প্রকৃত বৃষ্টিপাত শুরুর সময় এর পার্থক্য ২ থেকে ৪ ঘন্টা পূর্বে বা পরে হতে পারে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।