তিস্তা, ব্রক্ষমপুত্র, যমুনা ও সুরমা নদীর উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বন্যার প্রবল আশংকা দেখা যাচ্ছে।
আজ শনিবার থেকে রংপুর বিভাগের তিস্তা সহ অন্যান্য নদীগুলোতে; আগামীকাল রবিবার থেকে ব্রক্ষমপুত্র ও সুরমা ও সোমবারের পর থেকে যমুনা নদীর উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বন্যার প্রবল আশংকা দেখা যাচ্ছে।
গত বুধবার থেকে রংপুর বিভাগের জেলাগুলো ও পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার জেলা, আসাম, সিকিম ও মেঘালয় রাজ্য সহ পূর্ব ভারতীয় অন্যান্য রাজ্যগুলোর উপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার পঞ্চগড় জেলার বিপরীতে ভারতের শিলিগুড়ির মাটিগাডা নামক স্থানে ২৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে ১০০ মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গত ৩ দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল শুক্রবার নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলায় অবস্থিত তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ও লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বন্যা বিপদসীমার প্রায় ১ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আজ ২৬ শে আগস্ট। আশংকা করা যাচ্ছে আজ সারাদিনে তিস্তা নদীর পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আজ থেকে কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদীর পানিও বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু আশংকা করা যাচ্ছে। নেত্রকোনা জেলার সোমেশ্বরই নদীর পানিও আজ শনিবার থেকে বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু আশংকা করা যাচ্ছে যেহেতু গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে সরারাত ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আগস্ট মাসের ২০ তারিখের পর থেকে প্রত্যেকদিনের পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছিল যে আগস্ট মাসের ২৫ তারিখের পর থেকে আবারও তিস্তা, ব্রক্ষমপুত্র ও যমুনা নদীর পানি বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে সেই সাথে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার উপকূলবর্তী জেলাগুলোর নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র, আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সূচক ও আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-পূর্ব দিকের জেলাগুলো (দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার জেলা), সিকিম, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপর ৫০০ মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উপরোক্ত পূর্বাভাস সঠিক প্রমাণিত হলে তিস্তা, ব্রক্ষমপুত্র, যমুনা ও সুরমা নদীর উপকূলবর্তী সকল জেলায় বন্যা শুরু হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। আসন্ন এই বন্যা ২০২৩ বর্ষা মৌসুমে এই ৩ টি নদীর তীরবর্তী জেলাগুলোর উপরে সবচেয়ে বড় বন্যা হওয়ার সমূহ আশংকা রয়েছে।
ছবি: বাংলাদেশ সরকারের বন্য পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত ২৬ আগস্টে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি প্রবাহের মানচিত্র।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে।
ছবি: আমেরিকান গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ভারতের পূর্বভারতীয়ে বিভিন্ন রাজ্যের উপরে।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।