মঙ্গলবারের (জানুয়ারি ২) আবহাওয়া পূর্বাভাস: দেশের বেশিভাগ জেলা দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকার সম্ভাবনা
কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টার সময় দেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে ৫৭ টি জেলার উপরে বিভিন্ন ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি ছিল। সকাল ৭ টার সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, সিলেট, কক্সবাজার, নাটোর, পাবনা উপরে কুয়াশার উপস্থিতি ধরা পড়েনি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে। এই সময় পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। আজ সকালে অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের একাধিক জেলার উপরে।
সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিটের কুয়াশার চিত্র বিশ্লেষণ করে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজও প্রায় সারাদিন রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে সূর্যের আলো দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কুয়াশার পরিমাণ হালকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ২ টার পরে। ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুপুর ১২ টার পরে।
ঢাকা, ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১০ টার পরে।
চট্টগ্রাম, পার্বত্য-চ্রগ্রামের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ৯ টার পরে।
রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে কুয়াশা সরে গিয়ে সূর্যের আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সকাল ১১ টার পরে।
আজ সোমবার সূর্যের আলো দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী জেলার উপরে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে বুধবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত দেশের বেশিভাগ জেলার উপরে বিভিন্ন ঘনত্বের কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রংপুর, ও ময়মনিসংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে (পুরো রাত) ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের সকল জেলা। এছাড়া মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার উপরে। হালকা থেকে মাঝারি মানের কুয়াশায় ঢাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে।
দেশের উল্লেখযোগ্য শহর ও স্থানগুলোতে মঙ্গলবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড
আজ মঙ্গলবার রাত ৩ টার সময় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায় ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ভোর ৬ টার সময় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে ভোর ৬ টার সময় ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশালে ভোর ৬ টার সময় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে (সকাল ৬ টা বেজে ৪০ মিনিটে) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার উপরে কুয়াশার বিস্তার দেখা যাচ্ছে।
ছবি: আগামীকাল বুধবার সকাল ৬ টার সময়কার কুয়াশার সম্ভাব্যতার মানচিত্র, আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম “ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স” (যে স্থানে রং যত বেশি লাল সেই স্থানে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফগ স্টাবিলিটি ইনডেক্স এর মান ৩১ এর কম হলে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা; ৩১ থেকে ৫৫ এর মধ্য থাকলে হালকা থেকে মাঝারি মানের কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা ও ৫৫ এর বেশি হলে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম নির্দেশ করে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে মঙ্গলবার (জানুয়ারি ২) ও বুধবারের (জানুয়ারি ৩) কুয়াশা পূর্বাভাস
আজ মঙ্গলবারও ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের বেশিভাগ রাজ্য মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টার সময় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও। বিশেষ করে উত্তরের সকল জেলা (দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, কোলকাতা,) কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলও।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের বেশিভাগ জেলার উপরে আবারও মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনা খুবই বেশি যে আগামীকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গে সর্ব উত্তরের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উপরে সরাদিনই সূর্যের আলো দেখতে না পাওয়ার।
গত ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে ভারতের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের সকল রাজ্য ভারি কুয়াশার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে তা আজ জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে অনেক রাজ্যের উপরে। ভারি থেকে খুবই ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রাজ্যে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। দিল্লী, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বিমান বন্দরগুলোতে শত-শত ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে বিমান চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিসীমার অভাবে।
তবে আজ মঙ্গলবার ভারত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সকাল ৬ টা থেকে সকাল ৭ টার মধ্যে প্রাপ্ত বিভিন্ন চিত্রে (Visible, Dust RGB and Day Microphysics) দেখা গেছে যে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের ভারতীয় রাজ্যগুলোর উপরে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমে এসেছে গতকাল সোমবার অপেক্ষা। আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত জানুয়ারি মাসের ২ তারিখের পূর্বাভাস অনুসারে চলমান কুয়াশার পরিমাণ পুরোপুরি কমে যেতে জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
ভারত, জাপান ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সেন্সর দ্বারা সংগৃহীত কুয়াশার চিত্র ২ রা জানুয়ারি, ২০২৪।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।