রবিবারের (জুন ১৬, ২০২৪) এর আবহাওয়া পূর্বাভাস  

আজ রবিবার দুপুর ২ টার সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের উপরে মাঝারি থেকে ঘন মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ রবিবার রাতে আবারও দেশের উত্তরাঞ্চলের ৩ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ দুপুর ২ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের একাধিক জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা বিকেল ৫ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

আজ দুপুর ৩ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার উপরে বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাতের সম্ভব্য সময় নিম্নরূপ:

ময়মনসিংহ বিভাগ: দুপুর ৩ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টা মধ্যে জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে ময়মনিসংহ বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে আবারও বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। 

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন প্রায় সারাদিন ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ দিনের শুরুতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। 

ছবি: দুপুর ৩ টার সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র।

সিলেট বিভাগ: দুপুর ৩ টার পর থেকে রাত ৮ টা মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে আবারও বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। 

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে যে গত ২৪ ঘন্টায় মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পর্বত এলাকায় খুবই ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজ রবিবার থেকে আবারও সিলেট বিভাগের নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করার। সেই সাথে নতুন করে বন্যা পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে সিলেট বিভাগের জেলাগুলো।  

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন প্রায় সারাদিন সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ প্রায় স্বাধীন মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

রংপুর বিভাগ: বিকেল টার পর থেকে রাত ৮ টা মধ্যে রংপুর বিভাগের নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে রংপুর বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে আবারও বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। 

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন প্রায় সারাদিন রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ দিনের শুরুতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

রাজশাহী বিভাগ: আজ বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতে আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে আবারও বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। 

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ জয়পুরহাট, বগুড়া, ও সিরাজগঞ্জ জেলার উপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ রবিবার দুপুর ৩ টার পর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, বান্দরবন, ও কক্সবাজার এবং বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী, উত্তর ও মধ্য চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, ও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে হালকা বজ্রপাত মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা (৬০ থেকে ৭০%) করা যাচ্ছে।

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন প্রায় চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ বিভিন্ন জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ঢাকা বিভাগ:
আজ রবিবার দুপুর ৩ টার পর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহঘালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দুপুর ৩ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে টাঙ্গাইল, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ জেলার উপরে বৃষ্টির কিছু সম্ভাবনা (৭০ থেকে ৮০ %) রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে আগামীকাল সোমাবর ভোর এর মধ্যে পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের কোন-কোন জেলার উপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে।

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন ঢাকা বিভাগের উত্তর দিকের জেলাগুলোর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা সহ প্রায় সারদিন হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।  

বরিশাল বিভাগ: আজ রবিবার সন্ধ্যার পূর্বে বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। বিকেল ৬ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার কোন-ক-ন স্থানে হালকা পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সামান্য কিছু সম্ভাবনা রয়েছে।

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল থাকার সম্ভাবনা বেশি। 

ছবি: দুপুর ৩ টা বেজে ১০ মিনিট সময়কার বজ্রপাত মানচিত্র।

খুলনা বিভাগ:
আজ রবিবার দিনের অবশিষ্ট সময়ে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। তবে রাত ৮ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮ টার মধ্যে খুলনা বিভাগের উত্তর দিকের কোন-কোন জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৩০ থেকে ৪০ %) করা যাচ্ছে। 

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল থাকার সম্ভাবনা বেশি।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
=========================================
আজ রবিবার বিকেল ৪ টার পর থেকে ভোর ৫ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপর তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা ৮০ থেকে ৯০ %। আজ বিকেল ৫ টার পূর্বে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। তবে বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে বান্কুরা, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে (৭০ থেকে ৮০%)।

ঈদের দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস: ঈদের দিন পশ্চিমবঙ্গের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল থাকার সম্ভাবনা বেশি।

ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
========================================================
আজ রবিবার দুপুর ৩ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার ভোর ৫ টার মধ্যে পূর্ব আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপর দিয়ে একাধিকবার হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা (প্রায় ৮০ থেকে ৯০%) রয়েছে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
======================================
আজ রবিবার দুপুর ৩ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সকল জেলার উপর দিয়ে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের প্রবল আশংকা (৭০ থেকে ৮০ %) করা যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত উত্তর দিকের জেলাগুলোর উপরে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিকের জেলাগুলোর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশে একটি মধ্যম মানের বন্যা শুরুর আশংকা করা যাচ্ছে ঈদের পর থেকে।

গত ১ সপ্তাহ থেকে রংপুর বিভাগের জেলাগুলো ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুর-দুয়ার ও কুচবিহার জেলার উপরে নিয়মিত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। গত ৩ দিনে প্রায় প্রতিদিন নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলায় অবস্থিত তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ এর উজানে ভারতের জলপাইগুড়ি, আলিপুর-দুয়ার ও কুচবিহার জেলার উপরে খুব ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ৭ দিন এই সকল জেলার উপরে খুবই ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। একই সময়ে ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরেও খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৬ শে জুন পর্যন্ত ভারতের পশ্চিম-বঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার জেলা এবং আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা রয়েছে। ১৬ ই জুন থেকে শুরু করে আগামী ২৬ শে জুন পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১০০০ থেকে ১৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশংকা নির্দেশ করতেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। এই বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ বাংলাদেশের রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে ঈদের পর থেকেই তিস্তা ও দুধকুমার নদীর উপকূলবর্তী নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর জেলার তিস্তা নদীর উপকূলবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যার শুরু হওয়ার। 

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সাম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমান ২৬ শে জুন পর্যন্ত।

=============
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
=============

উপরে উল্লেখিত বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস সম্ভাবনা মাত্র। কোন স্থানে বৃষ্টিপাত আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক শর্ত পূরণের উপর নির্ভর করে। বৃষ্টিপাত শুরুর সময় ২ থেকে ৪ ঘন্টা পূর্বে কিংবা পরে হতে পারে