বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টির আশংকা (আপডেট ২): বাংলাদেশের উপকুলে আঘাতের আশংকা
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টির আশংকা (আপডেট ২): এপ্রিল ২৯, ২০২৪
বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশংকা নির্দেশ করতেছে আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আব হাওয়া পূর্বাভাস মডেল। এই মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে মে মাসের ১৩ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে গভীর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে, ভারতের আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ১৩ ই মে একটি লঘুচাপ চাপ সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টর জন্য সকল অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করায় লঘুচাপটি ১৪ মে এর মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ১৫ ই মে এর মধ্যে গভীর নিম্নচাপটি পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।
প্রকৃত পক্ষে যদি এই ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হয় তবে ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে রিমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া।
সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই মে মাসের ২৩ তারিখে পূর্ণিমা। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় হিমাল উপকূলে আঘাতের সম্ভব্য সময়ও ২০ থেকে ২৩ শে মে এর মধ্যে। আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় হিমাল বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূল দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা বেশি।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ২ টি মৌসুম: বর্ষাকালের পূর্বে ও বর্ষাকালের পরে। বর্ষার পূর্বের ঘূর্ণিঝড় মৌসুম মার্চ মাসে শুরু হলেও পুরো মার্চ ও এপ্রিল মাসে (আজ ২৯ শে এপ্রিল পর্যন্ত) উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে কোন লঘু চাপ/ নিম্নচাপ/ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় নি হওয়ার সম্ভাবনাও নাই এই মাসে। ইতিমধ্যেই ব্যাপক পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রের পানিতে। ফলে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে যার কারণে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় হিমাল খুবই শক্তিশালী হবে এই বিষয়ে হলফ করিয়া বলা যায়।
সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু মে মাসের ১৫ তারিখের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে যে সময় সূর্য ঠিক বঙ্গোপসাগরের উপরে খাড়া ভাবে অবস্থান করে থাকে। উপরে বর্ণিত সকল বিষয় বিবেচনা করে আশংকা করা যাচ্ছে যে সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি খুবই শক্তিশালি হওয়ার আশংকা রয়েছে।
আজ ২৯ শে এপ্রিলের তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়ই সম্বন্ধে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির সম্ভব্য সময়: ১৩ থেকে ১৭ শে মে
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য সময়: ২০ থেকে ২৪ শে মে
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান: ভারতের ওড়িশা উপকূল থেকে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য
স্থল ভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ: বঙ্গোপসাগরের পশ্চিম উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার; পূর্ব উপকূলে আঘাত করলে ঘন্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।
ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুসারে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সাম্ভ্য ঘূর্ণিঝড়টির আগামী ১৫ ই মে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের উত্তর পাশে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় হিসাবে অবস্থার করার আশংকা করা যাচ্ছে।
২০২৩ সালের ঘুর্নিঝত মোখা এর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।
২০২৩ সালের ২৮ শে মে ঘূর্ণিঝড় মোখা এর ৩ নম্বর আপডেট প্রকাশ করেছিলাম। আজ ২৯ শে এপ্রিল সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় হিমাল এর ২ নম্বর আপডেট প্রকাশ করলাম। ঘূর্ণিঝড় মোখা যে স্থানে সৃষ্টি হয়েছিল ও মে মাসের যেই সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় হিমাল ও একই স্থানে ও একই পথেই যাত্রা করার আশংকা করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার এর মতো ঘূর্ণিঝড় হিমালও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূলে আঘাত করার সম্ভব্য সময়ই একই (মে মাসের ২০ থেকে ২৪ তারিখ)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
মে মাসের ৩ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সঠিক ধারনা পাওয়া যাবে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি কেমন হবে ও কোন উপকূলে আঘাত করার আশংকা বেশি।
ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী
১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।
২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না।