একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

ঘূর্ণিঝড়

মঙ্গলবারের (জুন ১৮, ২০২৪) বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস

Blog Image
Email : 542k 12k

মঙ্গলবারের (জুন ১৮, ২০২৪) বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস

আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে পুরো দেশের উপরে মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। তবে ময়মনিসংহ, সিলেট, ঢাকা, ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে ঘন মেঘের উপস্থিতি রয়েছে। আজ দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট, ময়মনিসংহ, রংপুর, ও চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। ময়মনিসংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে খুবই ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

সিলেট বিভাগ: আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে একাধিকবার তীব্র বজ্রপাত সহ ভারি থেকে খুবই ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রম করার প্রবল আশংকা (৯০ থেকে ১০০ %) করা যাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা ২০২২ সালের মতো ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছ যে সোমবার সকাল ৯ টার থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টার পর্যন্ত মেঘালয় পর্বতের পূর্ব-খাসি হিল পর্বত এলাকায় ৭৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময়ে চেরাপুঞ্জি নামক স্থানে ৪৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ সকাল ৯ টার পর থেকে দুপুর ১ টা বেজে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২ দিনও মেঘালয় পর্বতের উপরে ভারি বৃষ্টির প্রবল আশংকা নির্দেশ করেছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের রাডার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে পুরো সিলেট বিভাগের জেলাগুলো এবং মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পর্বত এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে আজ ১৮ ই জুন, ২০২৪ তারিকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে আজ মঙ্গলবার সিলেট বিভাগের নদীগুলোতে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে নতুন করে বন্যা পানিতে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।

ছবি: দুপুর ৩ টা বেজে ২০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র।

চট্টগ্রাম বিভাগ:

দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি অতিক্রম করার প্রবল আশংকা (৮০ থেকে ৯০%) করা যাচ্ছে।

দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা উত্তর, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, উত্তর চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি জেলা এবং বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে কুমিল্লা দক্ষিণ, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, বান্দরবন, কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে তীব্র বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে।

ঢাকা বিভাগ:

আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী জেলার উপরে বৃষ্টির সম্ভাবনা (৭০ থেকে ৮০ %) রয়েছে। বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে এর মধ্যে মুন্সিগন্জ, নরায়নগন্জ জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে।

আজ দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে ঢাকা শহরের উত্তর দিকের কোন-কোন থাকা ও উপজেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।


রংপুর বিভাগ: আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার পর থেকে আবারও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার আশংকা (৬০ থেকে ৭০ %) করা যাচ্ছে। আজ রাতে আবারও রংপুর বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ: আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার পর থেকে আবারও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার আশংকা (৮০ থেকে ৯০ %) করা যাচ্ছে। আজ রাতে আবারও ময়মনসিংহ বিভাগের সকল জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৯০ থেকে ১০০ %) করা যাচ্ছে।

রাজশাহী বিভাগ: আজ বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতে আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাতে রাজশাহী বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপর দিয়ে বজ্রপাত সহ
হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের আশংকা (৪০ থেকে ৫০ %) করা যাচ্ছে।

বরিশাল বিভাগ: আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের উত্তর-পূর্ব দিকের জেলাগুলোর বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, ও ভোলা জেলার উপজেলাগুলোর উপরে।


ছবি: দুপুর ৩ টা বেজে ৩ মিনিট সময়কার বজ্রপাত মানচিত্র।

খুলনা বিভাগ:

আজ মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
=============================================
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার পর থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ৮ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা ৯০ থেকে ১০০ %। আজ পশ্চিমবঙ্গের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম।

ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
=============================================================
আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে পূর্ব আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপর দিয়ে একাধিকবার হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের সম্ভাবনা (প্রায় ৯০ থেকে ১০০%) রয়েছে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস
======================================
দুপুর ৩ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সকল জেলার উপর দিয়ে তীব্র বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি অতিক্রম করার প্রবল আশংকা (৯০ থেকে ১০০%) করা যাচ্ছে।


সিলেট বিভাগের পরে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরেও বন্যা শুরুর আশংকা করা যাচ্ছে।


বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৬ শে জুন পর্যন্ত ভারতের পশ্চিম-বঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, আলিপুর-দুয়ার জেলা এবং আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল আশংকা রয়েছে। আজ ১৮ ই জুন থেকে শুরু করে আগামী ২৮ শে জুন পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১০০০ থেকে ১৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশংকা নির্দেশ করতেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। এই বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ বাংলাদেশের রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের নদ-নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে সিলেট বিভাগের পরে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরেও বন্যা শুরুর। বিশেষ করে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর উপকূলবর্তী নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর জেলার তিস্তা নদীর উপকূলবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যার শুরু হওয়ার।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৮ শে জুন পর্যন্ত।

=============
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
=============

উপরে উল্লেখিত বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস সম্ভাবনা মাত্র। কোন স্থানে বৃষ্টিপাত আবহাওয়া সম্পর্কিত একাধিক শর্ত পূরণের উপর নির্ভর করে। বৃষ্টিপাত শুরুর সময় ২ থেকে ৪ ঘন্টা পূর্বে কিংবা পরে হতে পারে

 

 

 

 

Related Post