একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

Breaking News :
ঘূর্ণিঝড়

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "দানা" এর ৮ নম্বর আপডেট (২২ শে অক্টোবর, দুপুর ৩ টা )

Blog Image
Email : 45690k 12k

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "দানা" এর ৮ নম্বর আপডেট (২২ শে অক্টোবর, দুপুর ৩ টা)

বিস্তারিত পূর্বাভাস মন্তব্যের লিংকে (একই পূর্বাভাস ফেসবুকেও প্রকাশ করা হয়েছে)

জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সু-স্পষ্ট লঘুচাপটি গত ২৪ ঘন্টায় শক্তি অর্জন করে আজ আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার পর থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রে আজ দুপুর ২ টার সময় সু-স্পষ্ট লঘু চাপটির কেন্দ্র প্রায় ১৬ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৯০ দশমিক ৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপরে অবস্থান করিতেছে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রের চার পাশে বায়ুর গতিবেগ ছিল ঘন্টায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। নিম্নচাপটি পটুয়াখালী জেলার খেপু-পাড়া
নামক স্হন থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করিতেছিল।

Picture: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সু-স্পষ্ট লঘুচাপের কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণ্যমান মেঘের চিত্র (বিকেল ৪ টার সময় ধারণকৃত ছবি)। যে স্থানের মেঘের রং যত বেশি গাড় লাল সেই স্থানের মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে তত ভারি বৃষ্টি হচ্ছে।

সু-স্পষ্ট লঘু চাপটির বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে ও আগামী ২ দিন একই পথে অগ্রসর হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। নিম্নচাপটি বর্তমানে যে স্থানে আছে সেই স্থানে সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এখানে উল্লেখ্য যে ঘুর্নিঝড় সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করে যে স্থানের পানির তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস অপেক্ষা বেশি থাকে। সু-স্পষ্ট লঘু চাপটি বর্তমানে যে স্থানে আছে সেই স্থানর পানি তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও বর্তমান স্থান থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে বঙ্গোপসাগরের পানি পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ সু-স্পষ্ট লঘু চাপটির আগামী ৩ দিন ক্রমাগত ভাবে শক্তিশালি হতে থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

ঘুর্নিঝড় দানা উপকূলে আঘাত হানার পূর্বে সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করার আশংকা করা যাচ্ছে। স্থল ভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘন্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার দমকা হাওয়া সহ যা ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠার সভাবনা রয়েছে।

তবে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘুর্নিঝড় ডনা যে স্থানে (ওড়িশা রাজ্যের পুরী ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে) আঘাত করার কথা নির্দেশ করেছে আমি তাদের পূর্বাভাসের সাথে একমত না। আমি এখনও রবিবারে উল্লেখিত পূর্বাভাসের উপরেই আস্থা রাখতে চাই। অর্থাৎ, ঘুর্নিঝড়টি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা করছি।

আজ ২২ শে অক্টোবর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় দানা ওড়িশা রাজ্যের পুরী ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী উপকূলের উপর দিয়ে আগামী ২৪ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার পর থেকে স২৫ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার মধ্যে তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Severe Cyclonic Storm (89–117 km/h) হিসাবে স্থল ভাগে আঘাত করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

ফলে সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘুর্নিঝড় দানা এর বাংলাদেশের স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা কিছু কমে গেছে। আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল সম্ভব্য ঘুর্নিঝড় "ডানা" যে স্থানে আঘাত করার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে সেই স্থান থেকে ডান দিকে ২০০ কিলোমিটার দূরের কোন স্থানে আঘাত করতে পারে যেহেতু স্থল ভাগে আঘাত করার এখনও প্রায় ৩ দিন সময় হাতে রয়েছে।

-----> ঘুর্নিঝড় ডানা সমুদ্রে থাকা অবস্থায় খুবই তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Very Severe Cyclonic Storm (118–165 km/h) এর শক??তি অর্জন করার আশংকা করা যাচ্ছে।

-----> তবে স্থল ভাগে আঘাত করার সময় ঘুর্নিঝড়টি তীব্র ঘুর্নিঝড় বা Severe Cyclonic Storm (89–117 km/h) হিসাবে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে।

আজ ২২ শে অক্টোবর তারিখের পূর্বাভাস তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ডানা সম্বন্ধে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে।

লঘুচাল সৃষ্টির হয়েছিল: ২১ শে অক্টোবর
নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে: ২২ শে অক্টোবর
গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভব্য সময়: আজ ২২ শে অক্টোবর থেকে আগামীকাল ২৩ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার মধ্যে।
পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভব্য সময়: ২৩ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য সময়: ২৪ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার পর থেকে স২৫ শে অক্টোবর দুপুর ১২ টার মধ্যে
স্থলভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান: ভারতের ওড়িশা রাজ্য ও বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার মধ্যবর্তী যে কোন উপকূলীয় এলাকা।


ঘুর্নিঝড়ের কারণে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা:

সাতক্ষীরা, খুলনা, ও বাগেরহাট জেলা: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।

বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ২ থেকে ৩ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ২ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।

নোয়াখালী, চট্টগ্রাম: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।
কক্সবাজার: স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ২ থেকে ৪ ফুট বেশি (জোয়ারের সময়) ও স্বাভাবিক সময়ে অপেক্ষা ১ থেকে ৩ ফুট বেশি (ভাটার সময়)।


ঘুর্নিঝড়ের কারণে বিভিন্ন বিভাগে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ: ২৪ শে অক্টোবর থেকে ২৭ শে অক্টোবর পর্যন্ত

খুলনা বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
বরিশাল বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
রাজশাহী বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
ঢাকা বিভাগ: ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার
রংপুর বিভাগ: ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার
চট্টগ্রাম বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
ময়মনসিংহ বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
সিলেট বিভাগ: ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার

 

 

 

 

 

 

 

Related Post