একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

ঘূর্ণিঝড়

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মখা এর আপডেট ৪: বুধবার, ৩ ই মে, ২০২৩

Blog Image
Email : 45649k 12k

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মখা এর আপডেট ৪: বুধবার, ৩ ই মে, ২০২৩

ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিসটেম মডেল অনুসারে সাম্ভব্য ঘুর্নিঝড় মখা এর স্হভাগে আঘাতের স্হান ও সময়

গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে পার্থক্য কমে এসেছে। এই সময়ে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মখা এর স্থল ভাগে আঘাতের সময় প্রায় ১ দিন এগিয়ে এসেছে। তবে দুইটি মডেলের মধ্যে স্থল ভাগে আঘাতের সময়ের পার্থক্য ১৮ ঘণ্টা রয়েছে এখন যা প্রতিদিন কমতে থাকবে সামনের দিন গুলিতে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় দুইটি মডলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে পার্থক্য কমে এসেছে তা হলও ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে ও আমেরিকার মডেল অনুসারে উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থাল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা। ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে ১২ ই মে দুপুর ১২ টার পর থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে ও আমেরিকান মডলে অনুসারে ১৩ ই মে দুপুর ১২ টার পর থেকে স্থল ভাগে উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থাল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা।

ছবি: ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সাম্ভব্য ঘুর্নিঝড় মখা এর স্হভাগে আঘাতের স্হান ও সময়

উপরের তথ্যগুলো পাওয়া গেছে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে। আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সূচক যেমন Madden–Julian Oscillation (MJO) এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে এই MJO বর্তমানে যে দশায় রয়েছে সেই দশা বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করে। মে মাসের ২ তারিখে বঙ্গোপসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা একই দিনের ৩০ বছরের গড় তাপমাত্রা অপেক্ষা স্থান ভেদে ১ থেকে ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি রয়েছে। সবচেয়ে দুঃসংবাদ হলও যে পুরো বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রার বিচ্যুতি সর্বোচ্চ হলও চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে। প্রায় ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যে স্থানের সমুদ্রের পানির তাপমাত্রার বিচ্যুতি যত বেশি সেই স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির পরিমাণ তত বেশি।

ছবি: সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রার বিচ্যুতির মানচিত্র।

যে স্থানে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি লঘুচাপে পরিণত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে আব হাওয়া মডেলগুলো সেই পথেই বঙ্গোপসাগরের পানির তাপমাত্রা সর্বোচ্চ। বঙ্গোপসাগরের মধ্যে এমন একটি এলাকা আছে যে স্থানের উপর দিয়ে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি অল্প কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রচণ্ড শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে যেমন করে ঘূর্ণিঝড় আম্পান ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সাধারণ ঘূর্ণিঝড় থেকে সুপার-সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল।

ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত সকল তথ্য বিশ্লেষণ করে আমি প্রমাণ পেয়েছি যে ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফাণি সৃষ্টির সময় বঙ্গোপসাগরে আব হওয়া সম্পর্কিত সূচক গুলো যে অবস্থায় ছিলও ঠিক একই অবস্থায় রয়েছে এই সপ্তাহে বঙ্গপোসাগ। এখানে উল্লেখ্য যে ঘূর্ণিঝড় ফাণি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে মে মাসের ৩ তারিখে আঘাত করার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলও ঘন্টয়া ১৯৫ কিলোমিটার।

ছবি: ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ৫১ বার রান করা হয়েছিল (আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে এনসাম্বল ফোরকাষ্ট বলে) ও ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে সর্বোচ্চ সংখবার ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলায় উপকূল দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করতেছে।

ছবি: আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা নোয়া এর ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার উচ্চ আত্মবিশ্বাসের সাথে পূর্বাভাস করেছে যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় মখা চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলায় উপকূল দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

 

অবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড় স্থাল ভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।

 

 

 

Related Post