বৃহস্পতিবারের (জুলাই ১১, ২০২৪ ) আবহাওয়া পূর্বাভাস

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা বেজে ৪০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেশের ৪ টি বিভাগের (রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম) বিভিন্ন জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি ঘনত্বের মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ দুপুর ১২ টার পর থেকে আগামী কাল শুক্রবার সকাল ৮ টার মধ্যে এই ৪ টি বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। অন্যান্য ৪ টি বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান মেঘের চিত্র (দুপুর ১২ টা বেজে ৪০ মিনিট)

রংপুর বিভাগ: বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (দুপুর ১২ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সকল জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। আজ রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টার মধ্যে আবারও পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা জেলার উপরে বজ্রপাত সহ উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (সকাল ৯ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিভাগ জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। দুপুর ১২ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবন, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ও কুমিল্লা জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।

সিলেট বিভাগ: বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা এই পূর্বাভাস লেখার সময় (দুপুর ১২ টার) অব্যাহত ছিলও। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার পর থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৮ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের সকল জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির হওয়ায় সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। 

বরিশাল বিভাগ: দুপুর ১ টার পর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের একাধিক জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ: দুপুর ২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে শেরপুর ও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৮ টার মধ্যে শেরপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

খুলনা বিভাগ: দুপুর ১ টার পর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

ছবি: দুপুর ১২ টা বেজে ৫৫ মিনিটে সময় প্রাপ্ত বজ্রপাত মানচিত্র।

ঢাকা বিভাগ: দুপুর ২ টার পর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে ঢাকা বিভাগের পশ্চিম পাশের জেলাগুলো বিশেষ করে পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপরে হালকা মানের বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ ঢাকা শহরের উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে কোন-কোন এলাকার উপরে বিচ্ছিন্ন ভাবে খুবও সামান্য পরিমাণে বৃষ্টিপাত হতে পারে দুপুর ৩ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে।

রাজশাহী: দুপুর ২ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে জয়পুরহাট, নওগাঁ, বগুড়া, ও সিরাজগঞ্জ জেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
==============================================

এই পূর্বাভাস লেখার সময় (দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিট) পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছিল যা বিকেল ৫ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। আজ দুপুর ২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যাঞ্চলের বর্ধমান, বীরভূম, নদীয়া, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, জেলাগুলোর উপরে হালকা বজ্রপাতসহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। দুপুর ৩ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে দক্ষিণের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলী, কোলকাতা, মেদিনীপুর, বান্কুরা, পুরুলিয়া জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।

আজ কোলকাতা শহরের উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে দুপুর ২ টার পর থেকে বিকেল ৬ টার মধ্যে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস:
============================================

এই পূর্বাভাস লেখার সময় (দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিট) ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের বিভিন্ন জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। বিকেল ৬ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের বেশিভাগ জেলার উপরে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
===============================================================
আজ আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। 

ন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা পরিস্থিতির আপডেট (১১ ই জুলাই, ২০২৪)
===========================================

গত সোমবার থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম পাশে মাঝারি থাকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে যা আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে চলমান বৃষ্টিপাত আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশংকা দেখা যাচ্ছে রংপুর বিভাগের সকল জেলা, পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের জেলাগুলো, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে।

গত ৩ দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি-প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র নদীর এবং এই নদীগুলোর উপ ও শাখা নদীগুলোতে বন্যা বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে (১১ ই জুলাই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে)।  

 

বুধবার সকাল ৬ টার পর থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগন্জ জেলায় ২৬০ মিলিমিটার ও সিলেট জেলায় ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার মধ্যে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি নামক স্থানে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মেঘালয়ের খাসি পর্বত এলাকার অন্যান্য স্থানেও ভারি বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয় রাজ্যের খাসি পর্বত এলাকার উপরে হওয়া এই ভারি বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রবল আশংকা রয়েছে আজ থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদীগুলোর পানি সমতলের উচ্চতা দ্রুত বৃদ্ধির।

 

ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার অব্যাহত থাকার আশংকা
=======================================================================

ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে এই সপ্তাহেই বন্যার পানি পৌঁছে যাওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। পদ্ম-নদীর উপকূলবর্তী ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, মুন্সিগন্জ, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, জেলাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে।  

ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী

 ১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইটের নাম কিংবা মোস্তফা কামাল পলাশ (আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক, সাস্‌কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, সাসকাটুন, কানাডা) এর নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক।

২) এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস বেসরকারি তথ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। এই ওয়েবসাইটে প্রচারিত আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওয়বেসাইটের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি দায়ী থাকিবে না। 

About the Author

Mostofa Kamal Palash

Founder & Lead Meteorologist

Mostofa Kamal Palash is pursuing his Ph.D. in the School of Environment and Sustainability at the University of Saskatchewan, Saskatoon, Canada. Mostofa obtained his MSc from the department of Earth and Environmental Sciences at the University of Waterloo, Waterloo, Ontario, Canada. Mostofa’s MSc Thesis title was “A Comprehensive Sensitivity Analysis of the Weather Research and Forecasting (WRF) Modeling System over Southern Ontario, Canada”. Mostofa completed a Post Graduate Diploma in Earth System Physics from the Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP), Trieste, Italy. His diploma thesis title was "Climate Sensitivity of Land-Use Change over South Asia Using the RegCM3 Modeling System." Mostofa also obtained an MSc in Physics from Shahjalal University of Science and Technology (SUST), Bangladesh. His MSc thesis title was "Seasonal Variation of Sensible and Latent Heat Flux Tendency in Bangladesh." Lastly, Mostofa completed his Bachelor of Science in Physics from (SUST), Bangladesh.

View All Articles