শনিবারের (জুলাই ১৩, ২০২৪ ) আবহাওয়া পূর্বাভাস
আজ শনিবার দুপুর ৩ টা বেজে ২০ মিনিট সময়কার কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র বিশ্লেষণ করে দেশের অর্ধেক জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি ঘনত্বের মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। অবশিষ্ট অর্ধেক জেলা মেঘ মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। আজ সকাল থেকেই দেশের বেশিভাগ জেলা বৃষ্টিপাত মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো মেঘ ও বৃষ্টি মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। আজ মূলত দেশের উত্তর ও পূর্ব দিকের জেলাগুলো উপরে মাঘের উপস্থিতি রয়েছে। ফলে আজ দুপুর ৩ টা বেজে ৩০ মিনিটের পর থেকে আগামীকাল রবিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান মেঘের চিত্র (দুপুর ৩ টা বেজে ২০ মিনিট)
রংপুর বিভাগ: আজ বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। রাত ১২ টার পর থেকে আগামীকাল দুপুর ১২ টার মধ্যে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার উপরে বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টি শুরুর আশংকা করা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ: আজ বিকেল ৪ টার পর থেকে আগামীকাল সকাল ৬ টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, বান্দরবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপরে হালকা বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার আশংকা করা যাচ্ছে।
সিলেট বিভাগ: আজ শনিবার বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১০ টার মধ্যে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা রয়েছে। রাত ১০ টার পর থেকে আগামীকাল রবিবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬ টার পর থেকে আজ শনিবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৮ মিলিমিটার ও সিলেট জেলায় ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টার সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার উপরে ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়ার সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ: বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে জামালপুর ও ময়মনিসংহ জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
ছবি: দুপুর ৩ টা বেজে ৫০ মিনিটে সময় প্রাপ্ত বজ্রপাত মানচিত্র।
ঢাকা বিভাগ: বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
আজ ঢাকা শহরের উপরে বৃষ্টিপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
খুলনা বিভাগ: আজ খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে মাহুরা, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলা ও বাগেরহাট জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
রাজশাহী: আজ রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট জেলার কোন-কোন উপজেলার উপরে হালকা পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
বরিশাল বিভাগ: আজ বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
==============================================
এই পূর্বাভাস লেখার সময় (দুপুর ৩ টা বেজে ২০ মিনিট) পশ্চিমবঙ্গের বেশিভাগ জেলা মেঘ ও বৃষ্টিপাত মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। পুরো পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে শুধুমাত্র বান্কুরা ও পুরুলিয়া জেলার উপরে হালকা মানের বৃষ্টিপাতের হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। বিকেল ৪ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। আজ বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের কোন-কোন জেলার উপরে হালকা বজ্রপাতসহ হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে।
আজ কোলকাতা শহরের উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে বিকেল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস:
============================================
বিকেল ৫ টার পর থেকে রাত ৩ টার মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের বেশিভাগ জেলার উপরে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের পূর্ব দিকের ৩ জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত পূর্বাভাস
===============================================================
রাত ৮ টার পর থেকে ভোর ৫ টার মধ্যে আজ আসামের করিমগঞ্জ, হাইলাকান্ডি ও কাছার জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা পরিস্থিতির আপডেট (১৩ ই জুলাই, ২০২৪)
===========================================
গত সোমবার থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্ব-উত্তরের দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুর-দুয়ার, কুচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম পাশে মাঝারি থাকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে গতকাল শুক্রবার থেকে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে চলমান বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে আগামী ২ দিনের (সোমবারের মধ্যে) মধ্যে।
ছবি কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
গত প্রায় ১ সপ্তাহ নিয়মিত ভাবে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়া শুরু হয়েছিল। গতকাল শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি কমা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে আগামী সোমবার থেকে।
বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ-কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি-প্রবাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র নদীর এবং এই নদীগুলোর বেশিভাগ উপ ও শাখা নদীগুলোতে পানি-সমতলের উচ্চতা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (১৩ ই জুলাই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে)।
শুক্রবার সকাল ৬ টার পর থেকে আজ শনিবার সকাল ৬ টার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৮ মিলিমিটার ও সিলেট জেলায় ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ শনিবার সকাল ৯ টার মধ্যে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ খাসি পর্বত এলাকার উপরে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মেঘালয়ের খাসি পর্বত এলাকার অন্যান্য স্থানেও হালকা পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয় রাজ্যের খাসি পর্বত এলাকার উপরে হওয়া এই ভারি বৃষ্টিপাতের পুরো অংশ সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রবল আশংকা রয়েছে আগামীকাল রবিবার থেকে আবারও সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদীগুলোর পানি সমতলের উচ্চতা দ্রুত কামার শুরুর।
ছবি কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার অব্যাহত থাকার আশংকা
=======================================================================
ঢাকা শহরের চার-পাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে এই সপ্তাহেই বন্যার পানি পৌঁছে যাওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। পদ্ম-নদীর উপকূলবর্তী ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, মুন্সিগন্জ, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, জেলাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে।
