একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

গভীর নিম্নচাপটি খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা শুক্রবার ভোর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে (আপডেট ১০, বৃহঃপতিবার দিবাগত রাত ১ টা, ২০২৩)

Blog Image
Email : 45764k 12k

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা শুক্রবার ভোর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে

(আপডেট ১০, বৃহঃপতিবার দিবাগত রাত ১ টা, ২০২৩)

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার সকাল ৬ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা শতকরা ৯০% এর বেশি। স্থল ভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপর দিয়ে।

আজ রাত ১২ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রটি ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপরে অবস্থান করছিল (বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার উপকূল থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে) ও উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে যে পথে অগ্রসর হচ্ছে গভীর নিম্নচাপটি সেই পথে যাত্রা অব্যাহত থাকলে প্রায় ৮০ থেকে ৯০% নিশ্চয়তা সহকারে পূর্বাভাস করা যায় যে গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে সরাসরি। তবে গভীর নিম্নচাপটি যদি সামান্য পরিমাণে পূর্ব দিকে সরে যায়, তবে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করবে গভীর নিম্নচাপের বহিঃস্থ অংশ চট্টগ্রামের নোয়াখালী, ফেনী ও উত্তর চট্টগ্রাম জেলা ও খুলনা বিভাগের বাগেরহাট ও খুলনা জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করবে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করার আশংকা করা যাচ্ছে।

গাভীর নিম্নচাপটি প্রভাবে বাংলাদেশের উপর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। গভীর নিম্নচাপের কারণে সর্বোচ্চ পরিমাণের বৃষ্টিপাতের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাসমূহ নিম্নরূপ:

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগন্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষমবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি, ও চট্টগ্রাম জেলা।


ছবি বর্ণনা: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল (ECMWF Integrated Forecasting System) হতে প্রাপ্ত সম্ভব্য নিম্নচাপটির ৫১ টি সম্ভব্য যাত্রাপথ ও বাতাসের গতিবেগের চিত্র। এই চিতটিকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এনসেম্বল আবহাওয়ার পূর্বাভাস (Ensemble weather forecast) বলা হয়।

বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতের সম্ভাব্য সময়: ১৭ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।

বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ: ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার
বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ (দমকা হাওয়া): ঘন্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার

জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা: স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি

বৃষ্টিপাতের সম্ভব্য পরিমাণ (১৬ ই নভেম্বর মধ্য রাতের পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টা পর্যন্ত):


১) বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো: ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার
২) খুলনা বিভাগের জেলাগুলো: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৩) ঢাকা বিভাগের জেলাগুলো: বিভাগ ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৪) চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৫) সিলেট বিভাগের জেলাগুলো ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
৬) রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো: ৫০ থেকে ৭৫ মিলিমিটার
৭) ময়মনিসংহ বিভাগের জেলাগুলো: ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার
৮) রংপুর বিভাগের জেলাগুলো: ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের (ECMWF Integrated Forecasting System) পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।

 

ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।


গভীর নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে

আমেরিকান নৌ বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার হতে জারি করা সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে গভীর নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সামান্য সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করেছে। গভীর নিম্নচাপটি স্থল ভাগে আঘাত করার কিছু পূর্বে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তবে নাম হবে "মিধিলি"। এই নামটি ইরানের দেওয়া। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হলেও গভীর নিম্নচাপ হিসাবে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার উপরে দিয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করার আশংকা করা যাচ্ছে শুক্রবার ভোর ৬ টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে।

 

 

 

 

Related Post