১৩ অক্টোবর — আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস
১৩ ই অক্টোবর হলও অন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস বা International Day for Disaster Reduction। ঝুঁকি কমালে জীবন বাঁচে। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস মূল বার্তা হলও মানুষের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা যে সচেতন করা। মানুষকে বুঝানো যে বিপদ (hazard) নিজে অপরিবর্তনীয় হতে পারে, কিন্তু তার ক্ষতি নির্ভর করে মানুষের সংস্পর্শ ও দুর্বলতার ওপর। তাই পূর্ব প্রস্তুতি এবং ঝুঁকি নিরসনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা থাকলে যে কোন বিপদে ক্ষতি অনেক কমানো যায়।
ঝুঁকি নির্ণয়ের গাণিতিক সূত্র নিম্নরূপ:
ঝুঁকি = বিপদ × সংস্পর্শ × দুর্বলতা (ইংরেজি: Risk = Hazard × Exposure × Vulnerability)
শব্দগুলোর সহজ ব্যাখ্যা
১) বিপদ (Hazard): এমন একটি ঘটনা বা অবস্থা যা তাত্ক্ষণিক বা ধীরে ধীরে ক্ষতি করতে পারে — উদাহরণ: বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তীব্র তাপ, জলাবদ্ধতা। সহজ ভাষায় "বিপদ" বলতে বোঝায় সেই সব ঘটনার উৎস যেগুলো মানুষের জীবন, সম্পদ বা পরিবেশে নেতিবাচক ক্ষতি বা অস্বাস্থ্য সৃষ্টি করতে পারে।
মনে রাখবেন: “বৃষ্টি/ঝড়” নিজে বিপদ; কিন্তু তা তখনই ক্ষতি করবে যখন মানুষ বা সম্পদ তার সংস্পর্শে থাকবে ও দুর্বল হবে।
২) সংস্পর্শ (Exposure): কোনো ব্যক্তি, সম্প্রদায় বা সম্পদ কতটা সরাসরি কোনো বিপদের সামনে বা তার প্রভাবের অধীনে আছে। মানুষ, বাড়ি বা সম্পদ কতটা বিপদের সম্মুখীন— অর্থাৎ বিপদের সামনে আছে কিনা।
উদাহরণ: নদীর তীরে বসবাস করা, খোলা মাঠে কাজ করা, গরমে বাইরের কাজে থাকা — এসব বেশি সংস্পর্শ নির্দেশ করে।
৩) দুর্বলতা/ঝুঁকিপ্রবণতা/সংবেদনশীলতা/নাজুকতা (Vulnerability): কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠি বা অবকাঠামোর সেই বৈশিষ্ট্য যেগুলো তাকে বিপদের সম্মুখে/সংস্পর্শে কত সহজে ক্ষতিগ্রস্ত করে বা সংস্পর্শে থেকে কত সহজে ক্ষতি হবে তা নির্ধারণ করে।
উদাহরণ: দুর্বল বাড়ি, সীমিত স্বাস্থ্যসেবা, দরিদ্রতা, গর্ভবতী মহিলারা, বয়স-জনিত বা ক্রনিক রোগ থাকা — এগুলো দুর্বলতা বাড়ায়।
৪) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk management): বিপদের ক্ষতি কমানোর কাজগুলো— সতর্কবার্তা, আশ্রয়কেন্দ্র, শক্তিশালী বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, বন্যা-প্রতিরোধী বেড়িবাঁধ, নিরাপদ টিউবওয়েল/পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি। লক্ষ্য: সংস্পর্শ ও দুর্বলতা কমানো।