বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আপডেট: ৬ (২৪ শে মে, ২০২৫, বিকেল ৫ টা)
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আজকের আপডেটে ১ টি সু-সংবাদ আছে ও ৫ টি দুঃসংবাদ আছে।
একমাত্র সু-সংবাদ:
----> আজকের সু-সংবাদটি হলও এই যে বঙ্গোপসাগরে যে ঘুর্নিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল পূর্বের ৫ টি আপডেটে সেই ঘুর্নিঝড়টি (যদি হয় তবে নাম হবে মন্থা (Mon-Tha)) সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কমে গেছে। তবে পুরো-পুরি শেষ হয়ে যায় নাই।
-----> ঘুর্নিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কমে গেলেও লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে একই সাথে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত আজ ২৪ শে মে এর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে। বাতাসের গত গতিবেগ যদি ঘন্টায় প্রায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হয় তবে তাকে ঘুর্নিঝড় বলে। ঘুর্নিঝড়ের ছোটভাই-ব্রাদার হলও লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপ। এগুলোর বাতাসের গত গতিবেগ যদি ঘন্টায় প্রায় ৬৩ কিলোমিটার অপেক্ষা কম হয়ে থাকে।
----> এখানে উল্লেখ্য যে বর্ষাকালে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলে বঙ্গোপসাগরের উপরে ঘুর্নিঝড় সৃষ্টি হতে পারে না। মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলে উ-লম্ব বায়ু-শিয়ারের মান অনেক বৃদ্ধিপায় যা ঘুর্নিঝড় সৃষ্টি জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এই কারণে বর্ষাকালে মৌসুমি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারলেও তা ঘুর্নিঝড়ে পরিণত হতে পারে না। ঠিক এই কারণে বঙ্গোপসাগরে ঘুর্নিঝড় সৃষ্টির ২ টা মৌসুম রয়েছে। একটি হলও বর্ষাকাল শুরুর পূর্বে (১৫-ই মার্চের পর থেকে ৩১ শে মে পর্যন্ত) ও অন্যটি হলও বর্ষাকাল শেষের পরে (১৫-ই অক্টোবরের পর থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত)।
১ নম্বর দু-সংবাদ:
------> আজকের প্রথম দু-সংবাদটি হলও এই ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর আজকে ঘোষণা দিয়েছে যে ২০২৫ সালের বর্ষাকালের মৌসুমি বায়ু প্রবাহ আজ ভারতের কেরালা রাজ্য পৌঁছে গেছে। সেই সাথে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে যে ২০০৯ সালের পরে সর্ব-প্রথম এত তাড়াতাড়ি মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলও। ঐতিহাসিক ভাবে বর্ষাকালের উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ু-প্রবাহ শুরু দিন অপেক্ষা ৮ দিন পূর্বে।
-------> ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত বায়ু-প্রবাহের চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উপকূলে পৌঁছে গেছে আজ ২৪ শে মে। অর্থাৎ, আজ বা আগামীকাল থেকে বাংলাদেশে ২০২৫ সালের বর্ষাকাল শুরু হতে যাচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য যে ঐতিহাসিক ভাবে বর্ষাকালের উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ু-প্রবাহ কক্সবাজার জেলায় পৌঁছে ৩১ মে বা ১ লা জুন তারিখে। অর্থাৎ, ২০২৫ সালের মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের প্রবেশ করা শুরু করলো প্রায় ৮ দিন পূর্বে।
২ নম্বর দু-সংবাদ:
-----> আজকের দ্বিতীয় দু-সংবাদটি হলও এই যে লঘুচাল/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে তা সর্বশেষ ৫ টি আপডেটে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূল দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা নির্দেশ করলেও আজকের পূর্বাভাস অনুসারে সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের।
------> যেহেতু সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে একই সাথে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল তাই প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপে প্রভাবে বেশিভাগ বৃষ্টিপাত বাংলাদেশের উপরে হবে।
৩ নম্বর দু-সংবাদ:
-----> লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া গভীর সঞ্চরণশীল বৃষ্টি যুক্ত মেঘ ও উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ু-প্রবাহের সরাসরি সংঘর্ষ ঘটবে বাংলাদেশের উপরে লঘুচাপ সৃষ্টির একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাই বাংলাদেশের উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে ২৯, ৩০, ও ৩১ শে মে ও ১ লা জুন এই ৪ দিন। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উপরে।
৪ নম্বর দু-সংবাদ:
-----> ২৫, ২৬, ও ২৭ শে মে আবহাওয়া যে পরিমাণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তা হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। অর্থাৎ, পূর্বে আশা করা হয়েছিল যে এই ৩ দিন দেশব্যাপী অনেক কম বৃষ্টিপাত হবে ও আকাশ রৌদ্দজ্জল থাকবে তার সম্ভাবনা কমে গেছে কারণ মৌসুমি বায়ু আজ ২৪ শে মে বা আগামীকাল ২৫ শে মে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করার কারণে।
৫ নম্বর দু-সংবাদ:
-----> যদি সম্ভব্য লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপটি সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করে বাংলাদেশের মধ্যভাগের উপর দিয়ে আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের দিকে অগ্রসর হয় তবে ভারতের আসাম ও সিকিম রাজ্যের উপরে খুবই ভারি বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। আসাম ও সিকিম রাজ্যের উপরে যে বৃষ্টিপাত হয় তার পুরোটাই তিস্তা নদীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে তিস্তা নদীর উপরে অস্হিত ভারতের গজল-ডোবা বাঁধের সকল গেট খুলা দেওয়া হবে যার কারণে বাংলাদেশের তিস্তা নদীর উপরে অবস্থিত ডালিয়া ব্রিজের গেটগুলো খুলে দিতে হবে। ফলে আশংকা করা যাচ্ছে যে তিস্তা নদীর চর অঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা থাকবে।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে সাম্ভ্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আজ ২৪ শে মে থেকে শুরু করে জুন মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের উপরে।
আমি দুঃখিত বাংলাদেশের কৃষক ভাইদের কাছে যে আপনাদের জন্য কোন ভালো সংবাদ আমার কাছে নেই এই মুহূর্তে। আমি ২ দিন পূর্বেই বলেছি যে আমার ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় মে মাসে বাংলাদেশে এই পরিমাণ বৃষ্টি হতে দেখিনি যে পরিমাণ বৃষ্টি ২০২৫ সালে হচ্ছে।