বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি, নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে: ১৭ ই নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা
আপডেট ৮, বুধবার, ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৩
গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছিল আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম পাশে মধ্য বঙ্গোপসাগরে তা আজ ১৫ ই নভেম্বর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে (জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দুপুর ৩ টার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে) বলে আবহাওয়া ডট কমের দুপুর ১২ টার সময় প্রকাশিত দৈনন্দিন পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে দুপুর। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরও লঘু চাপ সৃষ্টির কথা নিশ্চিত করেছে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার সময় জারি কারা পূর্বাভাসে। আজ দুপুর ৩ টা বেজে ১০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্রে দেখা যাচ্ছে নিম্নচাপ কেন্দ্রটি ১৫ দশমিক ৩ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৬ দশমিক ৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপরে অবস্থান করছিল ও উত্তর দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।
ছবি বর্ণনা: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল (ECMWF Integrated Forecasting System) হতে প্রাপ্ত সম্ভব্য নিম্নচাপটির ৫১ টি সম্ভব্য যাত্রাপথ ও বাতাসের গতিবেগের চিত্র। এই চিতটিকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এনসেম্বল আবহাওয়ার পূর্বাভাস (Ensemble weather forecast) বলা হয়।
৮০ থেকে ৯০% নিশ্চয়তা সহকারে পূর্বাভাস করা যায় যে গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে সরাসরি।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি আজ বুধবার বিকেল থেকে আগামীকাল বৃহঃপতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নিম্নচাপটি আগামীকাল দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল বৃহঃপতিবার মধ্য রাতের পর থেকে গভীর নিম্নচাপটি দিক পরিবর্তন করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে জেট-স্ট্রিমের প্রভাবে। আগামী ১৭ ই নভেম্বর দুপুরের পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর ভোর ৬ টার মধ্যে মধ্যে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের উপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থল ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতের সম্ভাব্য সময়: ১৭ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টার পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার মধ্যে।
বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ: ঘন্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার
বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ (দমকা হাওয়া): ঘন্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার
জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা: স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি
বৃষ্টিপাতের সম্ভব্য পরিমাণ (১৫ ই নভেম্বর মধ্য রাতের পর থেকে ১৯ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টা পর্যন্ত): খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগ ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার; চট্টগ্রাম, ও সিলেট ১৫০ থেকে ২০০ মিলিমিটার; রাজশাহী ও ময়মনিসংহ ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার; রংপুর বিভাগ ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার।
ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের (ECMWF Integrated Forecasting System) পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
নিম্নচাপের কারণে সর্বোচ্চ পরিমাণের বৃষ্টিপাতের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাসমূহ নিম্নরূপ:
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, নড়াইল, মুন্সিগন্জ, নারায়ংন্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষমবাড়িয়া জেলা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর সম্ভব্য প্রভাব:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি আজ বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে আগামীকাল বৃহঃপতিবার সন্ধার পর্যন্ত ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নিম্নচাপটি আগামীকাল বৃহঃপতিবার দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল ১৬ ই নভেম্বর দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপটি দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ১৭ ই নভেম্বর দুপুরের পর থেকে নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা বিভাগের সুন্দরবনের উপকূল ঘেঁষে বরিশাল বিভাগের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের জেলাগুলোর উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, বর্ধমান জেলার উপরে প্রায় ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার (১৬ ই নভেম্বর সকাল থেকে ১৮ ই নভেম্বর মধ্যরাত্রির মধ্যে।)