রবিবারের (অক্টোবর ২৯, ২০২৩) আবহাওয়া পূর্বাভাস
আজ ২৯ শে অক্টোবর রবিবার দুপুর ১২ টার সময় জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূউপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র (visible imagery, ব্যান্ড ৩, শূন্য দশমিক ৬৪ মাইক্রোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য) বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাক্ষমণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার উপর খুবই সামান্য পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি রয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, চব্বিচশপরগনা,হাওড়া, ও হুগলী জেলার আকাশে সামান্য পরিমাণে মেঘের উপস্থিতি রয়েছে এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের অন্য সকল জেলার আকাশ মেঘ মুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপরে বায়ুচাপ মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভূ-পৃষ্ঠের উপর বায়ুর উচ্চ চাপ অবস্থা বিরাজ করতেছে যা ঘন মেঘ সৃষ্টি হতে বাধা প্রদান করতেছে। যার কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আকাশে উঁচু বৃষ্টি-যুক্ত মেঘের সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। বাংলাদেশের ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আকাশে বায়ুর এই উচ্চ চাপ অবস্থা আগামী এক সপ্তাহ জুড়ে বিরাজ করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ফলে আগামী এক সপ্তাহ দিনের বেলা আকাশ মেঘ মুক্ত থাকবে ও গরম আবহাওয়া অনুভূত হবে। পক্ষান্তরে রাতের বেলা আকাশ মেঘমুক্ত থাকার কারণে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাবে ও শীত অনুভূত হবে। সকালবেলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা পড়া শুরু করবে; ও সকাল বেলার তাপমাত্রা অনেক কম থাকবে।
আজ রবিবার দুপুর ১ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার সকাল ৬ টার মধ্যে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
পশ্চিমবঙ্গের উপর বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস
আজ রবিবার দুপুর ১ টার পর থেকে আগামীকাল সোমবার দুপুর ১ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১২ টা বেজে ৪০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের চিত্র বাংলাদেশের উপর
ছবি: কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রা। যে স্থানে তাপমাত্রা যত বেশি ঋনাত্নক সেই স্থানে মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে মেঘের মধ্যে বৃষ্টির পানির পরিমাণ তত বেশি।
ছবি (7.3 µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য): কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিটের সময় প্রাপ্ত চিত্র) মেঘের শীর্ষের তাপমাত্রা। যে স্থানে তাপমাত্রা যত বেশি ঋনাত্নক সেই স্থানে মেঘের উচ্চতা তত বেশি ও সেই স্থানে মেঘের মধ্যে বৃষ্টির পানির পরিমাণ তত বেশি।
জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১০ নম্বর ব্যান্ড (7.3 µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য) এর বৈশিষ্ট ও আবহাওয়াবিদরা কোন কাজে ব্যবহার করে থাকে?
ছবির বৈশিষ্ট: জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১০ নম্বর ব্যান্ডটি (7.3 µm এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ব্যবহার করার হয় এই ব্যান্ডে) বাতাসে অবস্থিত জলীয় বাষ্পের বৈশিষ্ট ও নিম্ন মধ্য-স্তরের বায়ুমণ্ডলীয় প্রবাহ সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ব্যান্ড বায়ুমণ্ডলের মধ্যম স্তরে অবস্থিত মেঘ এবং মেঘের মধ্যে অবস্থিত জলীয় বাষ্প থেকে নির্গত বিকিরণের পরিমাণ পরিমাপ করে মেঘের এই চিত্র তৈরি করে থাকে। আবহাওয়া পূর্বাভাস-বিদরা এই চিত্রটি ব্যবহার করে থাকেন বায়ুমণ্ডলের মধ্যম স্তরে অবস্থিত জ্বলিয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য যেমন মেঘের প্রবাহের বৈশিষ্ট্য যেমন মেঘ কোন দিকে থেকে কোন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে, বায়ু কোন দিক থেকে কোন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে, এবং এই বায়ু প্রবাহের মধ্য দিয়ে চলমান স্বল্প দৈর্ঘ্যের তরঙ্গ এর উপস্থিতি ও সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু এই ব্যান্ড প্রায় ৪০০ মিলিবার বায়ুচাপ উচ্চতায় বায়ুপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করতে পারে তাই এই চিত্র ব্যবহার করে জেট স্ট্রিক বা জেট বায়ুপ্রবাহ এর বৈশিষ্ট্য সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
জাপানের হিমাওয়ারি নামক কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের ১৬ টি ব্যান্ড বা চ্যানেলের মধ্যে ৩ টি ব্যান্ড ব্যবহার করা হয় বায়ুমণ্ডলের অবস্থিত জ্বলিয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য। এর মধ্যে ১০ নম্বর ব্যান্ড যা 7.3 µm দৈর্ঘ্যের তরঙ্গ ব্যবহার করে। এই ব্যান্ডকে "নিম্ন-স্তরের জলীয় বাষ্প" ব্যান্ড বলা হয়ে থাকে। এই ব্যান্ডের মাধ্যমে সাধারণত মেঘমুক্ত অঞ্চলে, ও মিডট্রোপোস্ফিয়ারের মধ্যে ( 500-750 hPa), নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ারিক বায়ু ট্র্যাক করতে, জেট স্ট্রিক সনাক্ত করতে ও মনিটর করতে ব্যবহৃত হয়। কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা, নিম্ন স্তরের বায়ুর সম্ভব্য আর্দ্রতা (বায়ুরমন্ডলে অবস্হিত আর্দ্রতার উল্লম্ব প্রোফাইল নির্নয়ের জন্য), কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনাযুক্ত অঞ্চল চিহ্নিত করন, বায়ুর মধ্যে অশান্তি বিদ্যমান, ও আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ধুয়ার কুন্ডুলীর মধ্যে অবস্থিত সালফার ডাই অক্সাইড (SO2) সমৃদ্ধ বায়ু, এবং লেক এর প্রভাবে সৃষ্ট মেঘ ও তুষার এর ব্যান্ড ট্র্যাক করে।
নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাস
আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর উপর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা নাই। নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর উপর দিয়ে, অতি বৃষ্টি, তাপ-প্রবাহ, কিংবা শৈত্য প্রবাহের মতো বিরূপ আবহাওয়া অতিক্রম করার কোন সম্ভাবনা নাই বলেই চলে।