একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

ঘূর্ণিঝড়

বুধবারের (নভেম্বর ২২, ২০২৩) বৃষ্টিপাত ও কুয়াশা পূর্বাভাস

Blog Image
Email : 4566k 12k

বুধবারের (নভেম্বর ২২, ২০২৩) বৃষ্টিপাত ও কুয়াশা পূর্বাভাস

আজ ২২ ই নভেম্বর, বুধবার, দুপুর ২ টার সময় জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দৃশ্যমান চিত্র (visible imagery) বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের চেন্নাই উপকূল থেকে পূর্ব দিকে যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপরে গত রবিবার যে লঘু চাপ সৃষ্টি হয়েছিল তা দুর্বল হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে শ্রীলংকা ও ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের দিকে সরে গেছে। যে কারণে প্রভাবের কারণে সৃষ্টি হওয়া মেঘ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়া বন্ধ হয়েছে। ফলে আজ বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপরে কোন রকম মেঘের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। ফলে আজ বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

ছবি: জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত (দুপুর ২ টা বেজে ৪০ মিনিট) মেঘের চিত্র বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর উপর

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল (ECMWF Integrated Forecasting System) হতে প্রাপ্ত আবহাওয়া পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আজ বুধবার দুপুর ২ টার পর আগামীকাল বৃহঃপতিবার দুপুর ২ টার মধ্যে বাংলাদেশের অন্য কোন জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

ইতিমধ্যেই আবহাওয়া ডটকম এর গতকাল মঙ্গলবারের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে যে নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখের পরে বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা নিদেশ করতেছে প্রায় সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। পূর্বে একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে যে বঙ্গোপসাগরে যখন লঘু চাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা দেখা যায় ঠিক একই সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর ভূপৃষ্ঠের কাছা-কাছি স্থানের বায়ুমণ্ডলের উপরে বায়ুর উচ্চ-চাপ অবস্থা বিরাজ করে ও ঐ সময় বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দিনের সময় মেঘমুক্ত আকাশ বিরাজ করে ও রাতে অপেক্ষাকৃত বেশি ঠাণ্ডা অবহাওয়া বিরাজ করে।

 

৩ দিনের বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস (নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত)

আজ বুধবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড পথকষ্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল (ECMWF Integrated Forecasting System) হতে প্রাপ্ত আবহাওয়া পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আগামী শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বৃহঃপতিবারের কুয়াশা পূর্বাভাস

আজ বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে আগামীকাল বৃহঃপতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত হালকা থাকে মাঝারি মানের কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সকল জেলার উপরে। অপেক্ষাকৃত বেশি কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর উপরে।

পশ্চিমবঙ্গের উপর বৃষ্টিপাত ও কুয়াশার পূর্বাভাস

আজ বুধবার দুপুর ২ টার পর থেকে আগামীকাল বৃহঃপতিবার দুপুর ২ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর উপরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উপরে হলকা পরিমাণে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


বঙ্গোপসাগরে আর একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা

 

বঙ্গোপসাগরে আর একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে ২৬ শে নভেম্বর থেকে ৫ ই ডিসেম্বরের মধ্যে

আগামী ২৬ ই নভেম্বর থেকে ৫ ই ডিসেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল। সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ও ভারতীয় উপ মহাদেশের উপর সাব-ট্রপিকাল জেট স্ট্রীমের অবস্থান এর প্রভাবে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ২৯ শে নভেম্বর এর মধ্যে; গভীর নিম্নচাপ ডিসেম্বরের ২ তারিখের মধ্যে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ছোট-ছোট ট্রলারগুলোকে ২৭ শে নভেম্বরের মধ্যে উপকূলে চলে আসলে ট্রলার ডুবে মৃত্যু ঝুঁকি কমে আসবে। আজ ২২ শে নভেম্বরের পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করা অশংকা করা যাচ্ছে যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে বাংলাদেশের উপরে আঘাত করতে পারে।

কৃষকদের জন্য পরামর্শ

সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলার কৃষকদের অনুরোধ করবো যে জমিতে পাকা ধান থাকলে তা কেটে মড়াই করাে জন্য। শীতকালীন শাক-সবজির জমিত যেন ঘূর্ণিঝড়ের সময় যেন পানি জমে শস্যের ক্ষতি না করে।

 

Related Post