একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

ঘূর্ণিঝড়

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি: বাংলাদেশের উপর সাম্ভব্য প্রভাব (আপডেট ৭, মঙ্গলবার, ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩)

Blog Image
Email : 78981k 12k

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি: বাংলাদেশের উপর সাম্ভব্য প্রভাব

আপডেট ৭, মঙ্গলবার, ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩

জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত দুপুর ১ টার চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের পশ্চিম পাশে মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচ??প সৃষ্টি হয়েছে যা সম্ভাবনার কথা পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া ডট কম গত ৬ দিন ধরে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরও বঙ্গপোসাগরে লঘু চাপ সৃষ্টির কথা নিশ্চিত করেছে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার সময় জারি কারা পূর্বাভাসে।

৭০ থেকে ৮০% নিশ্চয়তা সহকারে পূর্বাভাস করা যায় যে গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে সরাসরি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। লঘু চাপটি আগামীকাল দুপুরের মধ্যে নিম্নচাপে ও আগামীকাল বুধবার মধ্য রাতের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরে ১৬ ই নভেম্বর গভীর নিম্নচাপটি দিক পরিবর্তন করে ওড়িশা রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দিকে অগ্রশ হওয়া শুরু করবে জেট-স্ট্রিমের প্রভাবে। আগামী ১৭ ই নভেম্বর দুপুরের পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর মধ্য রাত্রির মধ্যে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের উপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থল ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

ছবি বর্ণনা: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল (ECMWF Integrated Forecasting System) হতে প্রাপ্ত সম্ভব্য নিম্নচাপটির ৫১ টি সম্ভব্য যাত্রাপথ ও বাতাসের গতিবেগের চিত্র। এই চিতটিকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এনসেম্বল আবহাওয়ার পূর্বাভাস (Ensemble weather forecast) বলা হয়।

২০২২ সালে ২৪ শে অক্টোবর বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের উপর দিয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করেছিল ঘূর্ণিঝড় সিতরাং। এই সপ্তাহের গভীর নিম্নচাপটি (যা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে) প্রায় একই সময়ে ও কাছাকাছি স্থানের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতের সম্ভাব্য সময়: ১৭ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার মধ্যে।

বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ: ঘন্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার
বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ (দমকা হাওয়া): ঘন্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার

জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা: স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি

বৃষ্টিপাতের সম্ভব্য পরিমাণ (১৫ ই নভেম্বর মধ্য রাতের পর থেকে ১৯ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টা পর্যন্ত): খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগ ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার; চট্টগ্রাম, ও সিলেট ১৫০ থেকে ২০০ মিলিমিটার; রাজশাহী ও ময়মনিসংহ ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার; রংপুর বিভাগ ২৫ থেকে ৭৫ মিলিমিটার।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের (ECMWF Integrated Forecasting System) পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।

ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেলের পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য লঘুচাপ টির কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।


নিম্নচাপের কারণে সর্বোচ্চ পরিমাণের বৃষ্টিপাতের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাসমূহ নিম্নরূপ:

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, নড়াইল, মুন্সিগন্জ, নারায়ংন্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষমবাড়িয়া জেলা।


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর সম্ভব্য প্রভাব:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। লঘু চাপটি আগামীকাল দুপুরের মধ্যে নিম্নচাপে ও আগামীকাল বুধবার মধ্য রাতের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১৬ ই নভেম্বর দুপুরের মধ্যে নিম্নচাপটি দিক পরিবর্তন করে ওড়িশা রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে পৌঁছানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ১৭ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার মধ্যে। ১৭ ই নভেম্বর দুপুরের পর থেকে নিম্নচাপটির কিছু অংশ পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন উপকূলের উপরে দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশক করার সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের জেলাগুলোর উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, বর্ধমান জেলার উপরে প্রায় ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার (১৬ ই নভেম্বর সকাল থেকে ১৮ ই নভেম্বর মধ্যরাত্রির মধ্যে।

Related Post