একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে সাম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "ডানা" সৃষ্টির আপডেট ২: ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিকর প্রভাব সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ।

Blog Image
Email : 458k 12k

বঙ্গোপসাগরে সাম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "ডানা" সৃষ্টির আপডেট ২: ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিকর প্রভাব সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামাতে কিছু গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ।

আজ ১৮ অক্টোবর আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ শে অক্টোবর দুপুরের পর থেকে ২৫ শে অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে। সম্ভাবনা রয়েছে সম্ভব্য ঘুর্নিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির ক্ষতিকর প্রভাব সর্বনিম্ন পরিমাণে নামিয়ে আনতে দরকার পূর্ব-প্রস্তুতি।

২০২৪ সালে বর্ষা মৌসুমে একাধিক বন্যার কারণে বাংলাদেশের একাধিক জেলার কৃষকরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার প্রভাব পড়ছে শাক-সবজির দামের উপরে। আগামী সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভাব্য ঘুর্নিঝড় "ডানা" এর সম্ভব্য ক্ষতি থেকে বাংলাদেশের কৃষক, মৎস্য চাষি, লবণ চাষি, চিংড়ি চাষিদের কৃষি সম্পদ রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। শীতকালীন অগ্রিম শাক-সবজির ক্ষেতগুলো রক্ষা করার জন্য সম্ভব্য এই ঘুর্নিঝড় এর সংবাদ বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে পৌছাতে হবে। সম্ভব্য এই ঘুর্নিঝড় আমরা ঠেকাতে পারবো না; তবে অগ্রিম পূর্বাভাস উপকূলীয় এলাকার কৃষক, জেলে ও মৎস্য ঘের এর মালিকদের পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে বলে মনে করি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "ডানা": কৃষকদের জন্য গুরুত্নপূর্ন পরামর্শ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "ডানা" এর প্রভাবে বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার উপরে বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, ঢাকা ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর উপরে। সম্ভব্য এই ঘুর্নিঝড়টির কারণে পুরো বাংলাদেশের উপরে ৪ থেকে ৫ দিন বৃষ্টিপাতের আশংকা করা যাচ্ছে। যেহেতু ঘুর্নিঝড়টি যে সময়ে আঘাত করতে যাচ্ছে সেই সময় বাংলাদেশের কৃষকদের জমিতে পাকা আমন কাটা ও মাড়াই এর অপেক্ষায় রয়েছে তাই বাংলাদেশের কৃষকদের অনুরোধ করবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার জন্য। জমিতে পাকা ধান থাকলে তা কেটে মড়াই করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে ২২ তারিখের মধ্যে। কৃষকদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে শাক-সবজির জমি থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জামা হওয়া বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্হা করে রাখার জন্য।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় "ডানা": সমুদ্র-গামী জেলেদের জন্য গুরুত্নপূর্ন পরামর্শ

সম্ভাবনা খুবই বেশি অক্টোবর মাসের ২২ তারিখ থেকে সমুদ্র উত্তাল হওয়া। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা যেন অবশ্যই অক্টোবর মাসের ২১ তারিখের মধ্যে উপকূলে ফেরত চলে আসে। ২২ শে অক্টোবর থেকে সমুদ্রে অবস্থান করা কোন ভাবে নিরাপদ হবে না। ২৩ শে অক্টোবর সমুদ্রে অবস্থান করলে ট্রলার ডুবে মৃত্যুর প্রবল ঝুঁকি থাকবে। ২০ শে অক্টোবর তারিখের পর থেকে নতুন করে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।

উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি চাষিদের জন্য পরামর্শ:

সম্ভাবনা রয়েছে সম্ভব্য ঘুর্নিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার। ফলে খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষিদের ঘেরের মাছ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে রাখার।

 

লবণ চাষিদের জন্য পরামর্শ:

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকার লবনচাষিদের জানানো যাচ্ছে যে ২৩ শে অক্টোবর তারিখ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে তা ২৮ শে অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাঠে থাকা লবণ অক্টোবর মাসের ২২ তারিখের মধ্যে তুলে ফেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ-গামী পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা

২৩ শে অক্টোবর থেকে ২৮ শে অক্টোবর পর্যন্ত টেকনাফ-টু-সেন্টমার্টীন নৌ-পথে সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফ লে এই সেন্টমার্টীন দ্বীপের ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের ২২ শে অক্টোবর তারিখের মধ্যে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।

ঘুর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখার পরামর্শ

সম্ভাবনা রয়েছে সম্ভব্য ঘুর্নিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার। ফলে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার মানুষদের ঘুর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যেহেতু সম্ভব্য ঘুর্নিঝড়টি ২৪ শে অক্টোবর দুপুরের পর থেকে ২৫ শে অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে তাই খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার প্রশাসনকে ঘুর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।

 

 

Related Post