একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস: আপডেট ৪

Blog Image
Email : 45648k 12k

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস: আপডেট ৪

মে মাসের ২০ তারিখ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো কিছুটা ব্যতিক্রমী পূর্বাভাস দিচ্ছে গত ৫ দিন ধরে। মডেলগুলো যে পূর্বাভাস দিচ্ছে সেই পূর্বাভাসে অনেক বেশি অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি, স্থলভাগে আঘাতের স্থান ও সময় বিষয়ে একটি মডেল অন্য মডেলের সাথে এক মত হচ্ছে না। দুইটি মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। যে কারণে মে মাসের ১০ তারিখের পর থেকে নতুন কোন আপডেট প্রকাশ করা হয়নি আবহাওয়া ডট কম ওয়েবসাইট।

ছবি: আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুসারে ২৭ শে মে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকুলে লঘুচাপ হিসাবে আঘাতের সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে (১৪ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।

এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করে আসলেও এই সপ্তাহে এই মডেলটি একদিন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিলে ও পরের দিন একটি লঘু চাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে। পক্ষান্তরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল শুরুতে একটি লঘু চাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করলেও গতকাল রবিবার থেকে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া শুরু করেছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে মে মাসের ২২/২৩ তারিখে ভারতের আন্দামান ও নিকবার দ্বিপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের গভীর সমুদ্রের উপরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে। এই লঘু চাপটি পরবর্তীতে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হয়ে ২৫ শে মে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের উপকুলে আঘাতের সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ শে মে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের উপকুলে আঘাতের সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে (১৪ মে এর পূর্বাভাস অনুসারে)।

এখানে উল্লেখ্য যে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একই সাথে সমুদ্রের কোন স্থানে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিলে সেই ঘুর্নঝড়টি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া যায়। আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একই সাথে প্রায় কাছা-কাছি সময়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘু চাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করলেও লঘুচাপটি পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কি না তা নিয়ে দুইটি মডেল এক মত হতে পারে নি। এখানে উল্লেখ্য যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি নিয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সঠিক পূর্বাভাস দিয়ে থাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল।

প্রকৃত পক্ষে যদি ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে রিমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি মায়ানমার ও ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের মধ্যবর্তী যে কোন উপকূলের উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত কর‌তে পারে। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি কেম শক্তিশালি হবে ও কোন উপকূলে আঘাত করবে তা অনেকাংশে নির্ভর করবে মে মাসের ২০ তারিখের পরে ভারতীয় উপমহাদেশের উপরে জেট স্ট্রিমের অবস্থানের উপরে। আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় রিমাল মে মাসের ২৫ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে উপকূলে আঘাত করতে পারে।

Related Post